(১১৬৩) আর্থনিতিঃ ৫০০ কোটি বাকি

Tuesday, May 24, 2011 Unknown
অর্থনিতি :::: বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বা বিপিসি, ডেসা, ডেসকো, সেতু বিভাগ বিমানসহ রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ সংস্থা করের ৫০০ কোটি টাকা পরিশোধ করছে না বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও বিপুল অঙ্কের এই অর্থ না পেয়ে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হিমশিম খাচ্ছে কর বিভাগ চাপ সৃষ্টির জন্য কর বিভাগ ওই সব সংস্থার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ বা স্থগিত করার কথাও ভাবছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে তথ্য জানা গেছে
এনবিআরের আয়কর প্রশাসনের সদস্য সৈয়দ আমিনুল করিম বলেন, এনবিআরকে বাড়তি কর আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে এখন সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে কর বিভাগ
এনবিআরের বিভিন্ন কর সার্কেলের তৈরি করা প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বিপিসির কাছে সর্বশেষ বকেয়া করের পরিমাণ ১৪৬ কোটি ৬৬ লাখ ৭৬ হাজার ৭২৮ টাকা ২০০৭-০৮ অর্থবছর পর্যন্ত রিটার্নের বিপরীতে বিপিসির টাকা বকেয়া পড়ে সংস্থাটি ২০০৮-০৯ ২০০৯-১০ অর্থবছরের রিটার্ন প্রতিবেদন লেখার তারিখ পর্যন্ত জমা দেয়নি বলেও জানা গেছে দুই অর্থবছরের রিটার্ন জমা হলে আরো বকেয়া করের হিসাব পাওয়া যেতে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা
তবে বিপিসির চেয়ারম্যান মোক্তাদির আলী বলেন, 'বিপিসিও সরকারি সংস্থা সংস্থা সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের মানুষকে ভর্তুকি মূল্যে পেট্রোলিয়াম সরবরাহ করে থাকে বছরের পর বছর ধরে ভর্তুকি দিয়ে বিপিসি অনেকটা নাজুক অবস্থায় রয়েছে এর পরও বকেয়া কর নিয়ে যথাযথ করণীয় নির্ধারণ করতে সব বিষয়ই পর্যালোচনা করা হচ্ছে যা করণীয় সরকারি সিদ্ধান্তেই করা হবে'জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি বা ডেসার বকেয়া কর ১৫৭ কোটি ৬৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা ২০০৯-১০ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ১০২ কোটি টাকার কর বকেয়া রাখে সংস্থাটি অথচ কর বিভাগ জানিয়েছে, ডেসার কোনো বিল বকেয়া নেই তারা ঠিকই বিদ্যুৎ সেবা দেওয়ার বিপরীতে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিল আদায় করেছে সংস্থাটির আদায় করা গ্রাহক বিলের ভিত্তিতেই কর প্রযোজ্য হয়েছে এই কর বকেয়া রাখার কোনো কারণ না থাকলেও ডেসা তাই করেছে
ডেসার ঊর্ধ্বর্তন কর্মকর্তার কাছে গত এপ্রিল বিষয়ে তাগাদাপত্র দেওয়ার পরও কোনো সাড়া পায়নি কর বিভাগ একইভাবে ঢাকা ইলেকট্রিক পাওয়ার সাপ্লাই কম্পানি বা ডেসকোর কাছে কর বিভাগের পাওনা আছে ৬২ কোটি ১৮ লাখ ২৬ হাজার টাকা সংস্থাটি সবচেয়ে বেশি ৩৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা কর বকেয়া রাখে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে এরপর ২০০৬-০৭ অর্থবছরে বকেয়া করের পরিমাণ ২২ কোটি ২৮ লাখ ১৭ হাজার টাকা, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে বকেয়া আছে এক কোটি ২৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা সংস্থাটি পরবর্তী দুই অর্থবছরের রিটার্ন দাখিল না করায় আরো বকেয়া করের পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারছে না কর বিভাগ সংস্থাটিও গ্রাহকের কাছ থেকে যে বিদ্যুৎ বিল আদায় করেছে তার ওপরই কর ধার্য করা হয়েছে
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষও সেতু ব্যবহার করা থেকে পাওয়া অর্থের ওপর প্রযোজ্য কর দিচ্ছে না সংস্থার কাছে বকেয়া আছে ৯১ কোটি টাকার কর গত অর্থবছরেও সেতু বিভাগ বিপুল অঙ্কের কর বকেয়া রেখেছিল পরে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার হুমকির পর সরকারের শীর্ষ মহলের হস্তক্ষেপে প্রায় দেড় কোটি টাকা পরিশোধ করা হয় চলতি অর্থবছরে বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও সেতু বিভাগের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি কর বিভাগ গত ১৫ মে অন্তত ৭৫ কোটি টাকার কর পরিশোধের জন্য সেতু বিভাগকে অনুরোধ করে কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া দেয়নি সেতু বিভাগ অন্যদিকে সরকারি মালিকানাধীন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণ বিল আদায় করলেও তার ওপর প্রযোজ্য কর দিচ্ছে না সংস্থার কাছে সর্বশেষ হিসাবে পাওনা করের পরিমাণ ৩২ কোটি টাকা
এসব বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, মাত্র পাঁচটি সরকারি সংস্থার কাছেই সরকারের পাওনা করের পরিমাণ প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও তারা কর পরিশোধ করছে না খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এসব সংস্থার কোনো কোনোটি আয়ের অর্থ ব্যাংকে নিজেদের অ্যাকাউন্টের বিপরীতে ফিঙ্ড ডিপোজিট করে রেখেছে এর মাধ্যমে বাড়তি মুনাফা আয় করা হচ্ছে অথচ পাওনা কর পরিশোধে প্রচণ্ড অনীহা আছে সংস্থাগুলোর   
 

Blog Archive