পাকিস্তানি একটি চক্রের যোগসাজশে দেশে পরিচালিত হচ্ছে চারটি এমএলএম কোম্পানি। এমওয়ে ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, বনভয়েজ ১০০০, ম্যাকনম লিমিটেড ও প্যানাসিয়া করপোরেশন নামের এসব এমএলএম কোম্পানির পরিচালনায় আছে পাকিস্তানের নাগরিক রিয়াজ খান, আতিফ কামরান, রাজা খালেদ ও তাহের মাহমুদ। একসময়কার জনপ্রিয় এমএলএম কোম্পানি বিজনাস ডটকম পরিচালনার সঙ্গে জড়িত ছিল এ পাকিস্তানি চক্র। এমএলএম ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে এ তথ্য। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০০৪ সালে ব্যাপক তোলপাড়ের পর বন্ধ হয়ে যায় বিজনাস ডটকম। পাকিস্তানি চক্রটি তখন র্যাবের হাতে গ্রেফতার হলেও পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে পাকিস্তান চলে যায়। এরপর ২০০৮ সালে স্থানীয় প্রতিনিধি ঠিক করে ভিন্ন ভিন্ন নামে আবারও টাকা পাচারের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তানি চক্রটি। হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা হয় এসব টাকা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আবু হেনা মো. রাজী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত এ কোম্পানিগুলো নিয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। টাকা পাচারের প্রমাণ পেলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হবে এবং দুদকের কাছে তা তদন্তের জন্য পাঠানো হবে।’ বাংলাদেশ ব্যাংক এসব প্রতিষ্ঠান মনিটর করে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের জনবলস্বল্পতার কারণে মনিটর করা সম্ভব হয় না। তবে অভিযোগ এলে তা অবশ্যই তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেয়া হয়। এমনকি অভিযোগকারী গ্রাহক না হয়ে অন্য কোনো সচেতন ব্যক্তি হলেও আমরা তা তদন্ত করে দেখব।’ এদিকে এমএলএম নীতিমালার খসড়া তৈরি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। জনপ্রিয় পদ্ধতি পিরামিড স্কিম বাতিল করে শিগগিরই এ নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খান। নিষিদ্ধ হতে যাওয়া পিরামিড স্কিম পদ্ধতি ব্যবহার করেই এখনো ব্যবসা করছে এ কোম্পানিগুলো। অনুসন্ধানে জানা গেছে, পাকিস্তানি চক্রের হয়ে স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে এমওয়ে ইন্টারন্যাশনাল পরিচালনা করছেন আল মাহমুদ মিঠু ও এএসএম শহীদুল হাসান। বনভয়েজ পরিচালনা করছেন ইকবাল মাহমুদ। ম্যাকনমের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন মাঈনুদ্দিন আসিফ এবং প্যানাসিয়ার দায়িত্বে আছেন আফজাল হোসেন বুলবুল। এরা সবাই একসময় বিজনাস ডটকমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তখন কর্মী হিসেবে শুরু করে এমএলএমে ভালো নেটওয়ার্কার ও লিডার হিসেবে নিজেদের পরিচিত করেছিলেন তারা। এ কারণে পাকিস্তানি চক্রের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। পুরনো সে সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে তারা দুই বছর আগে পাকিস্তানি চক্রের যোগসাজশে নতুন করে আলাদা নামে এমএলএম কোম্পানি গড়ে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছেন। এমওয়ে ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আল মাহমুদ মিঠু একসময় বিজনাস ডটকমের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কোনো পাকিস্তানি নাগরিক নেই।’ রাজা খালেদের নাম বললে তিনি অস্বীকার করে জানান, রাজা খালেদ প্যানাসিয়ার সঙ্গে কাজ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্যানসিয়ার সাবেক এক কর্মকর্তা জানান, রিয়াজ খান ও মাহফুজুর রহমান নামের দুই পাকিস্তানির মাধ্যমে প্যানাসিয়া কাজ শুরু করে। পরে রিয়াজ খান প্যানাসিয়া ছেড়ে দেন। মাহফুজুর রহমান বর্তমানে পাকিস্তানে প্যানাসিয়ার কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে দয়িত্বে আছেন। মাঝেমধ্যে বাংলাদেশে এসে তার লভ্যাংশ পাকিস্তানে নিয়ে যান। প্যানাসিয়ার ফেসবুক গ্রুপে প্রকাশিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছবিতেও রিয়াজ খানের উপস্থিতি রয়েছে। এসব ছবিতে রিয়াজ খান ও আফজাল হোসেন বুলবুলের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন তারকার ছবিও দেখা যায়। সূত্র জানিয়েছে, আতিফ কামরান, রিয়াজ খান ও রাজা খালেদ পাকিস্তানে আসা-যাওয়ার মধ্য দিয়েই চালিয়ে যাচ্ছেন টাকা পাচারের ব্যবসা। এদের মধ্যে তাহের মাহমুদ অধিকাংশ সময় দুবাই থাকেন। টাকা পাচারের কাজে পাকিস্তানি চক্রটিকে সহায়তা করে বাবু নামের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ইস্টার্ন প্লাজায় সাগর জুয়েলার্স নামে তার দোকান রয়েছে। স্বর্ণ ব্যবসার নামে দুবাইয়ে টাকা পাচারে এই বাবু সহায়তা করে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। এমএলএম কোম্পানির প্রতারণা প্রসঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার বেনজীর আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রতারণার অভিযোগ এলে বা কোনো মামলা হলে আমরা তখন ব্যবস্থা নিই। এ ক্ষেত্রেও আমাদের কাছে কোনো মামলা এলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কমিশনার (দক্ষিণ) মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এমএলএম কোম্পানিগুলোকে সবসময় পর্যবেক্ষণে রাখার চেষ্টা করছি। কেউ যদি আমাদের কাছে অভিযোগ করে বা কোনো প্রতারণার তথ্য দিতে পারে, তাহলে আমরা তা তদন্ত করে দেখব। তদন্তশেষে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেয়া হবে।’ সরেজমিনে দেখা গেছে, ভিন্ন নাম হলেও জায়গা হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে পুরনো পান্থপথকেই। এ চক্রের পুরো ব্যবসা পান্থপথ এলাকাকেন্দ্রিক। চারটি কোম্পানির মধ্যে দুটির অফিস বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে, একটি পান্থপথ সিগনালের কাছে রওশন টাওয়ারে এবং অন্যটির কোনো নির্দিষ্ট অফিস নেই। এটির কার্যক্রম পরিচালিত হয় সুবাস্তু টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় আসিয়ানা ও মেরিডিয়ান স্পাইসি ক্যাসল নামের দুটি রেস্টুরেন্টে বসে। জানা যায়, পান্থপথের সুবাস্তু টাওয়ারে ছিল একসময়কার আলোচিত এমএলএম কোম্পানি বিজনাস ডটকমের অফিস। বিজনাস ডটকম নিয়ে নানা অভিযোগ উঠলে ২০০৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানি চক্রের তিনজন র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল। পালিয়ে থাকায় তাহের মাহমুদকে তখন গ্রেফতার করতে পারেনি র্যাব। এদের মধ্যে আতিফ কামরান ও তাহের মাহমুদের নামে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা (মামলা নং-৮/০৪-০৯-২০০৪) হয়েছিল। বিজনাস ডটকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আলম সেলিম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলাটি ৪২০, ৪০৬ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনালের ২৫(ঘ) ধারায় নথিভুক্ত করে থানা। আর রিয়াজ খান ও রাজা খালেদের নামে মামলা হয় তেজগাঁও থানায়। দুই মাস ১৮ দিন কারাবাসের পর জামিনে ছাড়া পেয়ে ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে চক্রটি দেশ ছেড়ে চলে যায়। ২০০৮ সালের শুরুর দিকে দ্বিতীয় দফায় ব্যবসা করতে বাংলাদেশে আসে পাকিস্তানি এ চক্র। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ব্যবসাগুলো অনলাইনভিত্তিক হলেও ফরম পূরণ করে ব্যবসা শুরু করার সুযোগ রাখা হয়েছে। যে কারণে অনেক অশিক্ষিত লোকও কম্পিউটারের ওপর অন্ধ বিশ্বাস থেকে না বুঝেই বিনিয়োগ করছে এসব এমএলএম কোম্পানিতে। ব্যবসায় উন্নতির ধাপে ধাপে দেখানো হচ্ছে গাড়ি-বাড়ি ও বিদেশভ্রমণের লোভ। বসুন্ধরার লেভেল ৬-এ ম্যাকনম লিমিটেডের অফিসে আলাপ হয় বাবু নামের এক এজেন্টের সঙ্গে। গ্রাহক হতে চাইলে গেস্ট হিসেবে আপ্যায়ন করার প্রস্তাব দেন প্রথমে। এরপর ছক এঁকে বুঝিয়ে দেন, কীভাবে চাকরির বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে ম্যাকনম। তিনি জানান, প্রতিদিন মাত্র দুই ঘণ্টা সময় দিয়ে সাত মাস পর মাসিক আয় হবে ৪৪ হাজার ৮০০ টাকা। বছরশেষে প্রায় ১০ লাখ টাকা, ভালো পারফর্ম করলে কোটি টাকা আয় করাও সম্ভব। গ্রাহক হওয়ার জন্য ৭ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনতে হবে একটি ম্যাগনেটিক থেরাপি যন্ত্র। দুই বছরে তার নিচে (ডাউন লাইন) বাম-ডান মিলে ৪ হাজার ২০০ জন ম্যাকনমে যোগ দিয়েছে বলেও জানান তিনি। সংশ্লিষ্টদের মতে, এমএলএম কোম্পানিগুলো নানা ধরনের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের রয়েছে নিজস্ব ওয়েবসাইট। কারও কারও রয়েছে একাধিক সাইট। এ ছাড়া ফেসবুকের ফ্যানপেজ ব্যবহার করে ব্যবসার প্রসার ঘটাচ্ছে তারা। ম্যাকনম: এক যন্ত্র ব্যবহারে ৩০ রোগ মুক্তি প্রতিষ্ঠানটি ফিজিওথেরাপি ও আকুপাংচারের নামে যন্ত্র বিক্রির মাধ্যমে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। নিজের ও পরিবারের সুস্বাস্থ্যের পাশাপাশি অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপনের হাতছানি রয়েছে ম্যাকনমের বিজ্ঞাপনে। আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট স্তরে উন্নীত হলে ল্যাপটপসহ আরও বেশ কিছু প্রলোভন দেখানো হচ্ছে ম্যাকনমের গ্রাহক হতে আসা ব্যক্তিদের। দুই বছর ধরে ম্যাকনম তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। নানা ওয়েবসাইটের তথ্য ও ম্যাকনম সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ মুহূর্তে বাংলাদেশে তাদের সদস্যসংখ্যা ৬০ হাজারের মতো। তিন ধরনের পণ্য বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি। ম্যাগনেটিক থেরাপি নামের চিকিত্সাপদ্ধতি ব্যবহার করে প্রায় ৩০ ধরনের রোগ মুক্তি সম্ভব বলে দাবি করছে প্রতিষ্ঠানটি। এমওয়ে ইন্টারন্যাশনাল: গাড়ি-বাড়ি ও বিদেশভ্রমণের লোভ তাদের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, এ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদপ্রাপ্তিতে লোভনীয় উপহারের বিজ্ঞাপন। এমওয়ের অ্যাম্বাসেডর হলে দেয়া হবে নিজস্ব ফ্ল্যাট। মেগাস্টারের জন্য ইউরোপভ্রমণের ব্যবস্থাসহ সুপারস্টারের জন্য মালয়েশিয়াভ্রমণের সুযোগ রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে। কার্ডিফ্রেশ নামের ট্যাবলেট, বহনযোগ্য ইসিজি মেশিন, ইলেকট্রো ফিজিওথেরাপি যন্ত্র এবং নানা ধরনের ব্যথা নিরাময়ের এক বিশেষ যন্ত্র রয়েছে এমওয়ের পণ্য তালিকায়। এমওয়ের সাইটে শামীম আহমেদ ও মো. আবুল হোসেন নামের দুই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। এ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আল মাহমুদ মিঠু বলেন, আজগুবি পণ্য দিয়ে ব্যবসা করলে প্রকৃত এমএলএম ব্যবসা হয় না, সাধারণ মানুষ প্রতারিত হয়। তাদের পণ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা চীন থেকে তৈরি করে আনছি। এটা দেড় লাখ টাকার পণ্যের চেয়েও ভালো কাজ করবে, গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি।’ তাদের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আবুল হোসেন কোথায় কাজ করেন, তা বলা যাবে না। তাকে একজন গবেষক হিসেবে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রয়োজনে তিনি আসেন। আর ডা. শামীম এ কোম্পানিতেই চাকরি করেন।’ সূত্র জানিয়েছে, সাভারের সিআরপিতে ডিপ্লোমা করে ডা. শামীম হয়েছেন এ কোম্পানির বিশেষজ্ঞ ডাক্তার! প্যানাসিয়া: আশ্চর্য ব্রেসলেট! এমএলএম কোম্পানি প্যানাসিয়ার পণ্য তালিকায় রয়েছে প্লাগ অ্যান্ড সেভ নামের বিদ্যুত্ বিল সাশ্রয়ের একটি যন্ত্র, সোলার এনার্জি কোয়ান্টাম পেনড্যান্টস, বায়ো ম্যাগনেটিক ব্রেসলেট, এক্সিকিউটিভ বায়ো ম্যাগনেটিক ব্রেসলেট এবং সোলার এনার্জি কোয়ান্টাম ডায়মন্ড পেনড্যান্ট। প্যানাসিয়ার সাবেক এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্যানাসিয়ার কোনো পণ্যেরই কোনো ধরনের মান সনদ নেয়া নেই। চীন থেকে এসব পণ্য কেনার ক্ষেত্রে টাকা পাঠানো হয় হুন্ডির মাধ্যমে। আর পণ্যগুলো দেশে আসে বিভিন্ন লাগেজ পার্টির মাধ্যমে। এমনকি অনেক সস্তায় পণ্য কিনে এনে দেশে গ্রাহকদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করা হয়। পণ্যগুলোর কোনোটাই গ্রাহকদের কোনো কাজে আসে না বলেও জানান তিনি। এমনকি কমিশনের টাকা নিয়েও গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয় বলে জানান প্যানাসিয়ার সাবেক এ কর্মকর্তা। প্যানাসিয়ার সদস্য হতে সাতটি প্যাকেজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সাড়ে চার হাজার থেকে সাত হাজার ৯০০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে তাদের এ প্যাকেজগুলো। এ কোম্পানির সর্বোচ্চ পদ অ্যাম্বাসেডর। প্যানাসিয়ার সাইটে দেয়া আছে, অ্যাম্বাসেডর হতে পারলে একটি ড্রিম হাউসের মালিক হবেন তিনি। এতে সময় লাগবে ৩৬৫ দিন বা এক বছর। তার নিচের ধাপ হলো ডায়মন্ড ডিরেক্টর। ২৭০ দিনে এ পদ পেতে পারেন একজন সাধারণ সদস্য। আর এর জন্য বোনাস হিসেবে তিনি পাবেন একটি ১৩০০ সিসির স্মার্ট কার। এ রকম আরও দেয়া আছে প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট, জেনারেল ম্যানেজার, ম্যানেজারসহ এক্সিকিউটিভ পদ পেতে সম্ভাব্য সময় এবং বোনাসপ্রাপ্তির সুযোগের বর্ণনা। বনভয়েজ ১০০০: রেস্টুরেন্টে বসে ব্যবসা বনভয়েজের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ অ্যাডমিরালের মাসিক আয় ১৫ হাজার ডলার (১১ লাখ ১০ হাজার টাকা) দেখানো হয়েছে। আর সর্বোচ্চ পদ ফ্লিট অ্যাডমিরাল প্রতি মাসে ২০ হাজার ডলার (১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা) করে পাবেন বলে দেয়া আছে বনভয়েজের সাইটে। অর্থ উপার্জনের নিয়ম হিসেবে বলা হয়েছে একজন সদস্য তার নিচের চক্র পূরণ করতে দুজন নতুন সদস্যকে রেফার করবেন। এরপর তারা দুজন করে আরও চারজনকে প্রতিষ্ঠানে যোগ দেয়াতে পারলে প্রথমোক্ত সদস্যের একটি চক্র পূর্ণ হবে। এভাবে চক্র পূরণের মাধ্যমে তিনি ১ হাজার ডলার (৭৪ হাজার টাকা) কমিশন পাবেন বলে লোভনীয় অফার দিচ্ছে বনভয়েজ।