আগামী মাসেই জাহাজ ভাঙা নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে। গতকাল রাজধানীর বুয়েট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত 'শিপ রিসাইক্লিং : বাংলাদেশ প্রেক্ষিত' শীর্ষক সেমিনারে শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া এভাবে সময় বেঁধে দেন। এ সময় তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, জাহাজ ভাঙা ব্যবসায়ীরা প্রণয়ন করা নীতিমালা এমনভাবে অনুসরণ করবেন, যাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে কোনো আইন প্রয়োগ করতে না হয়। জাহাজ ভাঙা ও জাহাজ রিসাক্লিনিং খাতকে সম্ভাবনাময় খাত উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, 'নীতিমালায় সামাজিক দায়বদ্ধতাসহ অন্যান্য বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা থাকবে, যা এ খাতের বিকাশে সহায়ক হবে। এ ক্ষেত্রে চীনসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হচ্ছে।' মন্ত্রী বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া আর্থিক নীতির কারণে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদার হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৬.৭ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আগামী অর্থবছর তা ৭ ভাগে উন্নীত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। আনন্দ শিপ ইয়ার্ডের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহিল বারি বলেন, পরিবেশবান্ধব সবুজ জাহাজ ভাঙা ও রিসাইক্লিং শিল্পের জন্য সরকারি উদ্যোগে বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলার সুপারিশ করেন তিনি। বুয়েটের উপাচার্য এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, সস্তা শ্রমিকের কারণে জাহাজ ভাঙা ও রিসাইক্লিং শিল্পে বাংলাদেশ এক নম্বরে আছে। সভাপতির বক্তব্যে বুয়েট নেভাল আর্কিটেক অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান এম মাসুদ করিম বলেন, দেশে স্টিলের মোট জাতীয় চাহিদার ৫০ শতাংশ এ শিল্প থেকে মেটানো হয়ে থাকে। দেশে বর্তমানে আড়াই মিলিয়ন টন চাহিদার বিপরীতে দেড় মিলিয়ন টন স্টিল রিসাইক্লিং শিল্প খাত থেকে আসে। বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা ক্যাপটেন সালাউদ্দিন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে শতভাগ নিয়মমাফিক জাহাজ ভাঙা হয়। আনন্দ শিপইয়ার্ড লিমিটেডের সহায়তায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নেভাল আর্কিটেক অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এ সেমিনার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রথমপর্যায়ে সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আনন্দ শিপইয়ার্ডের চেয়ারম্যান ড. আবদুল্লাহিল বারি। দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রবন্ধ পাঠ করেন গোলাম জাকারিয়া, টি আলী, কে এস ইকবাল। অন্যান্যের মধ্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম হাবিবুর রহমান, যন্ত্রকৌশল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. এম সাদিকুল বারি প্রমুখ বক্তব্য দেন।