শেয়ারবাজার :::: আবদুর রহিম বাবা-মা হারান সাত বছরে। আপন বলতে এত বড় পৃথিবীতে তেমন কেউ নেই। এতিম হওয়ার পর মামা কাছে নিয়ে আসেন। পিয়নের কাজ জোটে একটি প্রতিষ্ঠানে। হাড়ভাঙা পরিশ্রমের কারণে অসম্ভব মেধাবী আবদুর রহিমের লেখাপড়া শেখার সুযোগ নেই। চৌকস ছেলেটা সুনামের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। তার মনের মধ্যে পাখা মেলতে থাকে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন। তাই কোনো বাধাই পথচলা থামাতে পারেনি আবদুর রহিমের।
'পিয়নের কাজ করবেন না'_এমন সিদ্ধান্তে ১৭ বছরের আবদুর রহিম চাকরি ছেড়ে দেন। পরিচিত একজনের সঙ্গে ক্ষুদ্র পরিসরে কোলকাতা শহরে দর্জির কাজ শুরু করেন। ধার্মিক আবদুর রহিমের কথা দিয়ে কথা রাখার অসাধারণ গুণাবলি ছিল। তাই অল্প দিনেই সবার আস্থা অর্জন করেন। ব্যবসা ভালোই চলছিল। কিন্তু আরো কিছু করার অদম্য ইচ্ছা তাঁকে সব সময়ই তাড়া করে ফিরত। তাই কাপড়ের দোকান বিক্রি করে ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু সে সময় রাজনৈতিক অস্থিরতায় ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হয়। ভারত-পাকিস্তানের ভৌগোলিক সীমারেখা আলাদা হয়। চট্টগ্রামে নতুন ঠিকানা হয় আবদুর রহিমের। সেখানে পিডবি্লউডিতে ওয়াসায় পাইপলাইন মেরামতের কাজ করতেন। এ কাজ করতে গিয়ে পরিচয় হয় ব্যাটারি প্রস্তুতকারক ব্রিটিশ একটি প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে। সে সময় বিদেশি এই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের ডিস্ট্রিবিউটর খুঁজছিল। আবদুর রহিম আগ্রহ প্রকাশ করেন এ কাজে। তাঁর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনায় প্রতিষ্ঠানটির কর্তাব্যক্তিরা সিদ্ধান্তে আসেন তাঁকে দিয়েই করাবেন ব্যাটারি ডিস্ট্রিবিউশনের কাজটি। এভাবে ১৯৫৮ সালে ব্যাটারির ব্যবসায়ে আসে আবদুর রহিমের রহিমআফরোজ কম্পানি। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকৃত 'লুকাস ব্যাটারি' আবদুর রহিমের বিক্রয় কৌশলের গুণে অল্প দিনেই দেশের প্রায় সবখানে পেঁৗছে যায়। ১৯৬০ সালে আবদুর রহিম পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। ব্যবসা বাড়তে থাকে। নাখালপাড়ায় নিজেউ জমি কিনে এ দেশেই লুকাস ব্যাটারি বানানোর কাজ শুরু করেন। সততা ও কৌশলের কারণে যত দিন ব্রিটিশ লুকাস ব্যাটারি বাংলাদেশে ছিল তত দিনই তাঁর একমাত্র বিক্রেতা হিসেবে রহিম আফরোজ কম্পানি কাজ করেছে। ১৯৮০ সালে বিদেশি এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেয়। ব্যাটারির ব্যবসায়ে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ আবদুর রহিম ব্যবসা পরিবর্তন করলেন না। নতুন আয়োজনে নিজেই শুরু করেন ব্যাটারির ব্যবসা। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে থাকে রহিমআফরোজ ব্যাটারি। সে সময় আবদুর রহিমের বয়স ছিল ৬৫ বছর। অনেকটা একক আধিপত্যে স্থানীয় বাজারে বিক্রি হতে থাকে রহিমআফরোজ ব্যাটারি। রপ্তানির প্রস্তুতিও নিতে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।
কিন্তু ১৯৮২ সালে ৬৭ বছর বয়সে মারা যান পরিশ্রমী ধার্মিক এই মানুষটি। রেখে যান তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। যাঁরা নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি। বাবার আদর্শকে সামনে রেখে এগিয়েছেন ছেলেমেয়েরা। উত্তরসূরিরা তাঁর গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। অর্জিত মেধা ও অভিজ্ঞতার সঠিক প্রয়োগে বাবার স্বপ্ন পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তাঁরা।
ফারজানা লাবনী
'পিয়নের কাজ করবেন না'_এমন সিদ্ধান্তে ১৭ বছরের আবদুর রহিম চাকরি ছেড়ে দেন। পরিচিত একজনের সঙ্গে ক্ষুদ্র পরিসরে কোলকাতা শহরে দর্জির কাজ শুরু করেন। ধার্মিক আবদুর রহিমের কথা দিয়ে কথা রাখার অসাধারণ গুণাবলি ছিল। তাই অল্প দিনেই সবার আস্থা অর্জন করেন। ব্যবসা ভালোই চলছিল। কিন্তু আরো কিছু করার অদম্য ইচ্ছা তাঁকে সব সময়ই তাড়া করে ফিরত। তাই কাপড়ের দোকান বিক্রি করে ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু সে সময় রাজনৈতিক অস্থিরতায় ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হয়। ভারত-পাকিস্তানের ভৌগোলিক সীমারেখা আলাদা হয়। চট্টগ্রামে নতুন ঠিকানা হয় আবদুর রহিমের। সেখানে পিডবি্লউডিতে ওয়াসায় পাইপলাইন মেরামতের কাজ করতেন। এ কাজ করতে গিয়ে পরিচয় হয় ব্যাটারি প্রস্তুতকারক ব্রিটিশ একটি প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে। সে সময় বিদেশি এই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের ডিস্ট্রিবিউটর খুঁজছিল। আবদুর রহিম আগ্রহ প্রকাশ করেন এ কাজে। তাঁর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনায় প্রতিষ্ঠানটির কর্তাব্যক্তিরা সিদ্ধান্তে আসেন তাঁকে দিয়েই করাবেন ব্যাটারি ডিস্ট্রিবিউশনের কাজটি। এভাবে ১৯৫৮ সালে ব্যাটারির ব্যবসায়ে আসে আবদুর রহিমের রহিমআফরোজ কম্পানি। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকৃত 'লুকাস ব্যাটারি' আবদুর রহিমের বিক্রয় কৌশলের গুণে অল্প দিনেই দেশের প্রায় সবখানে পেঁৗছে যায়। ১৯৬০ সালে আবদুর রহিম পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। ব্যবসা বাড়তে থাকে। নাখালপাড়ায় নিজেউ জমি কিনে এ দেশেই লুকাস ব্যাটারি বানানোর কাজ শুরু করেন। সততা ও কৌশলের কারণে যত দিন ব্রিটিশ লুকাস ব্যাটারি বাংলাদেশে ছিল তত দিনই তাঁর একমাত্র বিক্রেতা হিসেবে রহিম আফরোজ কম্পানি কাজ করেছে। ১৯৮০ সালে বিদেশি এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেয়। ব্যাটারির ব্যবসায়ে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ আবদুর রহিম ব্যবসা পরিবর্তন করলেন না। নতুন আয়োজনে নিজেই শুরু করেন ব্যাটারির ব্যবসা। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে থাকে রহিমআফরোজ ব্যাটারি। সে সময় আবদুর রহিমের বয়স ছিল ৬৫ বছর। অনেকটা একক আধিপত্যে স্থানীয় বাজারে বিক্রি হতে থাকে রহিমআফরোজ ব্যাটারি। রপ্তানির প্রস্তুতিও নিতে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।
কিন্তু ১৯৮২ সালে ৬৭ বছর বয়সে মারা যান পরিশ্রমী ধার্মিক এই মানুষটি। রেখে যান তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। যাঁরা নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি। বাবার আদর্শকে সামনে রেখে এগিয়েছেন ছেলেমেয়েরা। উত্তরসূরিরা তাঁর গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠানকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। অর্জিত মেধা ও অভিজ্ঞতার সঠিক প্রয়োগে বাবার স্বপ্ন পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তাঁরা।
ফারজানা লাবনী