শেয়ারবাজার :::: উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন তো দূরের কথা, সামষ্টিক অর্থনীতির গতানুগতিক কাঠামো অব্যাহত রেখে প্রবৃদ্ধির বর্তমান ধারা বজায় রাখাও কঠিন হবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ঠিক কোন পদক্ষেপগুলো কার্যকর হবে, সেগুলো নির্ধারণ করে সৃজনশীল আর্থিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। দেশের ও বিশ্বের শ্রমবাজারের চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে কর্মক্ষম জনশক্তিকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তরিত করে বেকারত্ব ও দারিদ্র্য কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে। মুদ্রা ও আর্থিক নীতির সমন্বয় করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা ও অঞ্চলভিত্তিক উন্নয়নবৈষম্য দূর করার কর্মপরিকল্পনা থাকতে হবে নতুন বাজেটে। তা না হলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ও দীর্ঘমেয়াদি রূপকল্পের বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।
বর্তমান সরকারের তৃতীয় বাজেটের অগ্রাধিকার কী হওয়া উচিত_এ প্রসঙ্গে এসব মতামত ব্যক্ত করেন গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন অন্বেষণের চেয়ারম্যান রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর। তাঁর মতে, মেয়াদের আড়াই বছরের মাথায় বাজেট প্রণয়ন করার সময় সরকারকে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলোর কথা বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে। কারণ অন্যান্য দলের ম্যানিফেস্টোর চেয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের ম্যানিফেস্টো আলাদা। এতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে তা অর্জনের দিনক্ষণও ঠিক করে দেওয়া আছে। তাই সাফল্য-ব্যর্থতার হিসাব নেওয়া ভোটারদের জন্য সহজ হবে।
দেশের ভেতরে মূল্যস্ফীতি ও ডলারের সঙ্গে টাকার মূল্যহ্রাস এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্য সংকটের কারণে রেমিট্যান্স আয়ে সম্ভাব্য ঘাটতি ও জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য_এ রকম কঠিন অবস্থার মধ্যে বর্তমান সরকারের তৃতীয় বাজেট তৈরি করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী ধারাকে বর্তমান অর্থনীতির প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে রাশেদ তিতুমীর বলেন, এ সমস্যা সমাধানে সরকার ভুল পথে হাঁটার কারণে মূল্যস্ফীতি আরো প্রকট হয়েছে। আগে ১০০ টাকায় যে সামগ্রী পাওয়া যেত, এখন তা কিনতে লাগছে ১১০ টাকা। অথচ মানুষের প্রকৃত আয় বাড়েনি। মূল্যস্ফীতির এ চাপ তৈরি হয়েছে মূলত আমদানি ব্যয় বাড়ার কারণে, স্থানীয় উৎপাদন না বাড়িয়ে শুধু মুদ্রানীতি দিয়ে এ চাপ সামলানো সম্ভব নয়। কিন্তু আইএমএফের কাছ থেকে এক বিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়ার আশায় ঋণের সুদের হারের সীমা (১৩ শতাংশ) উঠিয়ে নেওয়া হলো। এতে তহবিল খরচ বেড়ে গেল, উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হলো। এ জন্য মূল্যস্ফীতি ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতাই দায়ী। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী ডলারের দাম কমলেও বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার কারণে বাংলাদেশে ডলারের সঙ্গে টাকার মান কমছে। এতে আমদানি ব্যয় বাড়ছে, বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। এত দিন বাংলাদেশ ব্যাংক বলে আসছিল তাদের হাতে পর্যাপ্ত ডলারের মজুদ আছে। অথচ এখন বাজারে ডলারের সংকট।
রাশেদ তিতুমীর বলেন, আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হলো কৃষি, রেমিট্যান্স ও পোশাক শিল্প। তিনটি খাতেরই সাফল্যের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে শ্রমশক্তি। অথচ আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় শ্রমিকরা অনুপস্থিত। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো বয়স্ক মানুষের ভারে ন্যুব্জ। আর আমাদের দেশে রয়েছে ১৯ থেকে ৪৫ বছর বয়সের কর্মক্ষম বিপুল জনগোষ্ঠী। এ জনগোষ্ঠীকে সমস্যা হিসেবে না দেখে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করে দেশ-বিদেশে কাজে লাগানোর মহাপরিকল্পনা থাকতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ খুব সহজেই নতুন প্রযুক্তি আত্মস্থ করতে পারে। গার্মেন্ট কারখানায় গেলেই দেখা যায় গ্রামের স্বল্পশিক্ষিত বা নিরক্ষর মেয়েরা কেমন অনায়াসে আধুনিক যন্ত্রপাতি চালাচ্ছে। এসব সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে রেমিট্যান্স প্রবাহে সম্ভাব্য ধস মোকাবিলা করা যাবে, বেকারত্বও কমানো যাবে।
উন্নয়ন অন্বেষণের প্রধান বলেন, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিসহ দীর্ঘমেয়াদি রূপকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে সরকারকে ভ্রান্ত নীতি গ্রহণ ও তার অভিঘাত সামলানোর পণ্ডশ্রমের ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা না হলে সামষ্টিক স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির ধারা ধরে রাখা দুষ্কর হবে। নীতি ও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও পরিকল্পনা প্রণয়নেও সৃজনশীলতা ও বাস্তবমুখিতা থাকতে হবে। মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশের ঘরে আনতে লেগেছে ১০ বছর, এখন ৮ শতাংশে পেঁৗছানোর কথা বলা হচ্ছে পাঁচ বছরের মধ্যে। অথচ এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য যে বিশদ কর্মপরিকল্পনা থাকা দরকার, তা নেই। আঞ্চলিক বৈষম্য কমানোর জন্য কর ও ঋণের সুদের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দিতে হবে। একজন উদ্যোক্তা কেন ঢাকা ছেড়ে গাইবান্ধা যাবেন, যদি না তিনি ৫ শতাংশ হারে ব্যাংক ঋণ না পান।
রাশেদ তিতুমীর বলেন, 'আমাদের সমস্যাগুলো কী, তা সবার জানা। অর্থমন্ত্রীর কাছেও এসব অজানা নয়। সমাধানের পথও কমবেশি সবার জানা; কিন্তু সমস্যা রয়ে গেছে বাস্তবায়নে। শুধু বছর বছর পরিকল্পনা নিলেই হবে না, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে, লক্ষ্য অর্জনে তাদের আইনগত বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশে চাপ না থাকলে কিছু অর্জিত হয় না। বাধ্য না করলে মানুষ ট্যাঙ্ দিতে চাইবে না। উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে তাই দাতা ও গ্রহীতা উভয় পর্যায়েই জবাবদিহি ও বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে হবে।'
বর্তমান সরকারের তৃতীয় বাজেটের অগ্রাধিকার কী হওয়া উচিত_এ প্রসঙ্গে এসব মতামত ব্যক্ত করেন গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন অন্বেষণের চেয়ারম্যান রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর। তাঁর মতে, মেয়াদের আড়াই বছরের মাথায় বাজেট প্রণয়ন করার সময় সরকারকে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলোর কথা বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে। কারণ অন্যান্য দলের ম্যানিফেস্টোর চেয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের ম্যানিফেস্টো আলাদা। এতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে তা অর্জনের দিনক্ষণও ঠিক করে দেওয়া আছে। তাই সাফল্য-ব্যর্থতার হিসাব নেওয়া ভোটারদের জন্য সহজ হবে।
দেশের ভেতরে মূল্যস্ফীতি ও ডলারের সঙ্গে টাকার মূল্যহ্রাস এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্য সংকটের কারণে রেমিট্যান্স আয়ে সম্ভাব্য ঘাটতি ও জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য_এ রকম কঠিন অবস্থার মধ্যে বর্তমান সরকারের তৃতীয় বাজেট তৈরি করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী ধারাকে বর্তমান অর্থনীতির প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে রাশেদ তিতুমীর বলেন, এ সমস্যা সমাধানে সরকার ভুল পথে হাঁটার কারণে মূল্যস্ফীতি আরো প্রকট হয়েছে। আগে ১০০ টাকায় যে সামগ্রী পাওয়া যেত, এখন তা কিনতে লাগছে ১১০ টাকা। অথচ মানুষের প্রকৃত আয় বাড়েনি। মূল্যস্ফীতির এ চাপ তৈরি হয়েছে মূলত আমদানি ব্যয় বাড়ার কারণে, স্থানীয় উৎপাদন না বাড়িয়ে শুধু মুদ্রানীতি দিয়ে এ চাপ সামলানো সম্ভব নয়। কিন্তু আইএমএফের কাছ থেকে এক বিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়ার আশায় ঋণের সুদের হারের সীমা (১৩ শতাংশ) উঠিয়ে নেওয়া হলো। এতে তহবিল খরচ বেড়ে গেল, উৎপাদন ও প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হলো। এ জন্য মূল্যস্ফীতি ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতাই দায়ী। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী ডলারের দাম কমলেও বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার কারণে বাংলাদেশে ডলারের সঙ্গে টাকার মান কমছে। এতে আমদানি ব্যয় বাড়ছে, বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে। এত দিন বাংলাদেশ ব্যাংক বলে আসছিল তাদের হাতে পর্যাপ্ত ডলারের মজুদ আছে। অথচ এখন বাজারে ডলারের সংকট।
রাশেদ তিতুমীর বলেন, আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হলো কৃষি, রেমিট্যান্স ও পোশাক শিল্প। তিনটি খাতেরই সাফল্যের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে শ্রমশক্তি। অথচ আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় শ্রমিকরা অনুপস্থিত। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো বয়স্ক মানুষের ভারে ন্যুব্জ। আর আমাদের দেশে রয়েছে ১৯ থেকে ৪৫ বছর বয়সের কর্মক্ষম বিপুল জনগোষ্ঠী। এ জনগোষ্ঠীকে সমস্যা হিসেবে না দেখে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করে দেশ-বিদেশে কাজে লাগানোর মহাপরিকল্পনা থাকতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ খুব সহজেই নতুন প্রযুক্তি আত্মস্থ করতে পারে। গার্মেন্ট কারখানায় গেলেই দেখা যায় গ্রামের স্বল্পশিক্ষিত বা নিরক্ষর মেয়েরা কেমন অনায়াসে আধুনিক যন্ত্রপাতি চালাচ্ছে। এসব সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে রেমিট্যান্স প্রবাহে সম্ভাব্য ধস মোকাবিলা করা যাবে, বেকারত্বও কমানো যাবে।
উন্নয়ন অন্বেষণের প্রধান বলেন, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিসহ দীর্ঘমেয়াদি রূপকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে সরকারকে ভ্রান্ত নীতি গ্রহণ ও তার অভিঘাত সামলানোর পণ্ডশ্রমের ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা না হলে সামষ্টিক স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির ধারা ধরে রাখা দুষ্কর হবে। নীতি ও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও পরিকল্পনা প্রণয়নেও সৃজনশীলতা ও বাস্তবমুখিতা থাকতে হবে। মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশের ঘরে আনতে লেগেছে ১০ বছর, এখন ৮ শতাংশে পেঁৗছানোর কথা বলা হচ্ছে পাঁচ বছরের মধ্যে। অথচ এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য যে বিশদ কর্মপরিকল্পনা থাকা দরকার, তা নেই। আঞ্চলিক বৈষম্য কমানোর জন্য কর ও ঋণের সুদের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় দিতে হবে। একজন উদ্যোক্তা কেন ঢাকা ছেড়ে গাইবান্ধা যাবেন, যদি না তিনি ৫ শতাংশ হারে ব্যাংক ঋণ না পান।
রাশেদ তিতুমীর বলেন, 'আমাদের সমস্যাগুলো কী, তা সবার জানা। অর্থমন্ত্রীর কাছেও এসব অজানা নয়। সমাধানের পথও কমবেশি সবার জানা; কিন্তু সমস্যা রয়ে গেছে বাস্তবায়নে। শুধু বছর বছর পরিকল্পনা নিলেই হবে না, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে, লক্ষ্য অর্জনে তাদের আইনগত বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশে চাপ না থাকলে কিছু অর্জিত হয় না। বাধ্য না করলে মানুষ ট্যাঙ্ দিতে চাইবে না। উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে তাই দাতা ও গ্রহীতা উভয় পর্যায়েই জবাবদিহি ও বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে হবে।'