শেয়ারবাজার :::: নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসি পুনর্গঠন, ব্যাংক ঋণ সমন্বয়ে সময় বাড়ানোসহ এ সপ্তাহে একাধিক ইতিবাচক খবর আছে পুঁজিবাজারকে ঘিরে। সরকারও শেয়ারবাজারকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য ঘরে-বাইরে চাপের মধ্যে আছে। আসন্ন বাজেট শেয়ারবাজার-বান্ধব হবে_এমন কথা শোনা গেছে এসইসি থেকে। তাই স্বাভাবিকভাবেই পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা আশা করছে, বাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে; কিন্তু এত ইতিবাচক খবরের পরও বাড়ছে না লেনদেন। গত কিছু দিন ধরে একটি গণ্ডির মধ্যেই লেনদেন ঘুরপাক খাচ্ছে। এর জন্য পুঁজিবাজারে তারল্য সংকটকে দায়ী করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।
তাঁদের মতে, বাজারে আর্থিক প্রবাহ না বাড়িয়ে যত ইতিবাচক পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন, বিনিয়োগকারীদের হারানো আস্থা ফিরে আসবে না। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংককেই এগিয়ে আসতে হবে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এঙ্চেঞ্জে (সিএসই) কিছু দিন ধরে দেশের এই দুই পুঁজিবাজারে গড় লেনদেন হচ্ছে ৪০০ কোটি টাকার আশপাশে। অথচ ছয় মাস আগেও এই লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত।
শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধারাবাহিক দরপতনের পর কয়েক দিনে একাধিক ইতিবাচক সিদ্ধান্ত এসেছে পুঁজিবাজারে। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর ঋণ সমন্বয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় ছয় মাস সময় বাড়িয়েছে। এসইসির শূন্য দুটি সদস্য পদেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জাতীয় সংসদ ও এর বাইরেও পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। এসইসি থেকেও বলা হচ্ছে এবারের বাজেট শেয়ারবাজার-বান্ধব হতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ের প্রায় সব ইঙ্গিতই ইতিবাচক বাজারের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে; কিন্তু তার পরও সার্বিক লেনদেনে এর প্রতিফলন ঘটছে না। ইতিবাচক পদক্ষেপগুলো সাময়িক প্রতিফলন হিসেবে গত তিন দিন অধিকাংশ শেয়ারের দাম বাড়লেও মোট লেনদেনের পরিমাণ বাড়ছে না।
এই জন্য বাজারে তারল্যের সংকটকেই দায়ী করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মুয়াজ্জেম হোসেন। গতকাল এ প্রসঙ্গে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'শেয়ারবাজারের আর্থিক সংকট কাটাতে এখন অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকেই এগিয়ে আসতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নীতিমালার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগে ছাড় দিতে পারে। তবে অবশ্যই তা মনিটরিংয়ে থাকতে হবে।' তিনি বলেন, 'বিনিয়োগকারীদের হাতে নগদ অর্থ নেই। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যত পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন, বাজারে লেনদেন বাড়বে না।' তবে আস্থা ফেরানোর জন্য অবশ্যই শেয়ার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে তিনি জানান।
সিএসই সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদ বলেন, 'সরকার যে এই পর্যায়ে এসে পুঁজিবাজার সম্পর্কে গুরুত্ব অনুধাবন করেছে_এই জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কারণ পুঁজিবাজারকে উপেক্ষা করে কোনো দেশ উন্নতি করতে পারে না। যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে সেটার জন্য আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।' সিএসই সভাপতি বলেন, 'শেয়ারবাজার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককেও একটু নমনীয় হতে হবে। এর সঙ্গে পাইপলাইনে সরকারি-বেসরকারি যেসব শেয়ার আছে, সেগুলোকেও আসতে দেওয়া উচিত। এতে বাজারের গভীরতা বাড়ে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়।' তিনি সরকারের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদেরও দায়িত্বশীল আচরণের অনুরোধ জানান। স্বল্পস্থায়ী বিনিয়োগের পরিবর্তে ভালো মৌলভিত্তির শেয়ারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের এখন মোক্ষম সময় বলে মনে করেন তিনি।
সিএসইর সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, 'এফবিসিসিআই সভাপতি গত রবিবার শেয়ারবাজার থেকে ব্যাংকগুলো যে লাভ করেছে, তা আবার শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের দাবি জানিয়েছেন। আমিও বিশ্বাস করি, এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলে বাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে। অন্যথায় অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এসইসির ওপর বিনিয়োগকারীদের যে বিতৃষ্ণার জন্ম নিয়েছে, তা দূর হবে না, অনাস্থাও কাটবে না।'
চিটাগাং ইনভেস্টর ফোরামের সভাপতি আছলাম মোরশেদ বলেন, 'সাম্প্রতিক বাজার পরিস্থিতি এমনই যে আমরা বিনিয়োগকারীরা কোনো বাজার-বান্ধব সিদ্ধান্ত দেখলেই আশান্বিত হই; কিন্তু আবার ভয়ে থাকি হয়তো নেতিবাচক কিছু হতে পারে। অর্থাৎ বাজারের প্রতি আস্থার সংকট রয়েছে।' তিনি বলেন, 'বাজার-বান্ধব যত কিছুই করা হোক না কেন, তারল্য প্রবাহ না বাড়ালে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হবে না।'
তাঁদের মতে, বাজারে আর্থিক প্রবাহ না বাড়িয়ে যত ইতিবাচক পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন, বিনিয়োগকারীদের হারানো আস্থা ফিরে আসবে না। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংককেই এগিয়ে আসতে হবে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এঙ্চেঞ্জে (সিএসই) কিছু দিন ধরে দেশের এই দুই পুঁজিবাজারে গড় লেনদেন হচ্ছে ৪০০ কোটি টাকার আশপাশে। অথচ ছয় মাস আগেও এই লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত।
শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধারাবাহিক দরপতনের পর কয়েক দিনে একাধিক ইতিবাচক সিদ্ধান্ত এসেছে পুঁজিবাজারে। এর মধ্যে ব্যাংকগুলোর ঋণ সমন্বয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় ছয় মাস সময় বাড়িয়েছে। এসইসির শূন্য দুটি সদস্য পদেও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জাতীয় সংসদ ও এর বাইরেও পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। এসইসি থেকেও বলা হচ্ছে এবারের বাজেট শেয়ারবাজার-বান্ধব হতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ের প্রায় সব ইঙ্গিতই ইতিবাচক বাজারের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে; কিন্তু তার পরও সার্বিক লেনদেনে এর প্রতিফলন ঘটছে না। ইতিবাচক পদক্ষেপগুলো সাময়িক প্রতিফলন হিসেবে গত তিন দিন অধিকাংশ শেয়ারের দাম বাড়লেও মোট লেনদেনের পরিমাণ বাড়ছে না।
এই জন্য বাজারে তারল্যের সংকটকেই দায়ী করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মুয়াজ্জেম হোসেন। গতকাল এ প্রসঙ্গে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'শেয়ারবাজারের আর্থিক সংকট কাটাতে এখন অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকেই এগিয়ে আসতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নীতিমালার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগে ছাড় দিতে পারে। তবে অবশ্যই তা মনিটরিংয়ে থাকতে হবে।' তিনি বলেন, 'বিনিয়োগকারীদের হাতে নগদ অর্থ নেই। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যত পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন, বাজারে লেনদেন বাড়বে না।' তবে আস্থা ফেরানোর জন্য অবশ্যই শেয়ার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে বলে তিনি জানান।
সিএসই সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদ বলেন, 'সরকার যে এই পর্যায়ে এসে পুঁজিবাজার সম্পর্কে গুরুত্ব অনুধাবন করেছে_এই জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কারণ পুঁজিবাজারকে উপেক্ষা করে কোনো দেশ উন্নতি করতে পারে না। যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে সেটার জন্য আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।' সিএসই সভাপতি বলেন, 'শেয়ারবাজার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককেও একটু নমনীয় হতে হবে। এর সঙ্গে পাইপলাইনে সরকারি-বেসরকারি যেসব শেয়ার আছে, সেগুলোকেও আসতে দেওয়া উচিত। এতে বাজারের গভীরতা বাড়ে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়।' তিনি সরকারের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদেরও দায়িত্বশীল আচরণের অনুরোধ জানান। স্বল্পস্থায়ী বিনিয়োগের পরিবর্তে ভালো মৌলভিত্তির শেয়ারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের এখন মোক্ষম সময় বলে মনে করেন তিনি।
সিএসইর সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, 'এফবিসিসিআই সভাপতি গত রবিবার শেয়ারবাজার থেকে ব্যাংকগুলো যে লাভ করেছে, তা আবার শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের দাবি জানিয়েছেন। আমিও বিশ্বাস করি, এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিলে বাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে। অন্যথায় অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এসইসির ওপর বিনিয়োগকারীদের যে বিতৃষ্ণার জন্ম নিয়েছে, তা দূর হবে না, অনাস্থাও কাটবে না।'
চিটাগাং ইনভেস্টর ফোরামের সভাপতি আছলাম মোরশেদ বলেন, 'সাম্প্রতিক বাজার পরিস্থিতি এমনই যে আমরা বিনিয়োগকারীরা কোনো বাজার-বান্ধব সিদ্ধান্ত দেখলেই আশান্বিত হই; কিন্তু আবার ভয়ে থাকি হয়তো নেতিবাচক কিছু হতে পারে। অর্থাৎ বাজারের প্রতি আস্থার সংকট রয়েছে।' তিনি বলেন, 'বাজার-বান্ধব যত কিছুই করা হোক না কেন, তারল্য প্রবাহ না বাড়ালে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হবে না।'