চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর দিয়েই চালু হওয়ার কথা ছিল ট্রানজিট। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে ভারতের পক্ষে সবচেয়ে বড় এজেন্ডা হিসেবে আলোচিত হয়েছে ট্রানজিট প্রসঙ্গ আর বাংলাদেশের পক্ষে আলোচিত ছিল তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তির মুখে দুই সরকারপ্রধানের শীর্ষ বৈঠকের এক দিন আগে সবার কাছে মোটামুটি পরিষ্কার হয়ে যায়, তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তি হচ্ছে না। এরপর সোমবার রাতেই সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে ধারণা পাওয়া যায়, তিস্তার পানি না পেলে ট্রানজিট নিয়ে এগোবে না বাংলাদেশ। ঠিক তা-ই হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বৈঠকে নির্ধারিত অধিকাংশ চুক্তি হলেও ট্রানজিট বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি। দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি, একটি প্রটোকল ও আটটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
ট্রানজিট ও তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে আশাবাদী ছিলেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। কারণ ট্রানজিট বিষয়ে চুক্তি হলে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে এবং সে দেশে রফতানি বাড়বে বলে আশাবাদী ছিলেন দেশের ব্যবসায়ীরা। ট্রানজিটের ফলে বাংলাদেশে ভারতের বড় ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের সম্ভাবনাও দেখছিলেন তারা। কিন্তু এই দফায় তাদের সে আশা পূরণ হলো না।
মনমোহনের সফর নিয়ে ইন্দো-বাংলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহ্মাদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আমরা খুবই আশাবাদী। তিস্তা ও ট্রানজিট চুক্তি সামনে অবশ্যই হবে। যেভাবে চুক্তি হলে দীর্ঘ সময় তার কার্যকারিতা থাকে, সেভাবেই চুক্তি করা উচিত।’
তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তি না হওয়ায় কি ট্রানজিট চুক্তি আটকে গেছে— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি মোটেই এ রকম নয়। দুটিই বন্ধুপ্রতিম দেশ। তাড়াহুড়ো করে কোনো কিছু করা ঠিক নয়। ট্রানজিট বিষয়ে এখনো অনেক হোমওয়ার্ক বাকি আছে। ফি কত হবে, রুট কী হবে— এমন অনেক বিষয় অমীমাংসিত আছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকে বলতে পারেন এগ্রিমেন্টস অব ট্রায়াল রান। আমি আশাবাদী, এক বছরের মধ্যেই ট্রানজিট ও তিস্তার পানি ভাগাভাগি বিষয়ে চুক্তি হবে।’