অপহরণের পর নির্যাতন চালিয়ে বিবস্ত্র করে এক কলেজছাত্রীর ভিডিওচিত্র ধারণ করার গ্লানি সইতে না পেরে ঈদের দুই দিন আগে ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে তার পরিবারের অভিযোগ। গত সোমবার রাতে পুলিশ ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত গিয়াস উদ্দিনকে পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
ছাত্রীর বাবা কালের কণ্ঠকে জানান, তিনি ও তাঁর স্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালে কাজ করেন এবং পাশেই কোয়ার্টারে থাকেন। গত সোমবার তাঁরা স্বামী-স্ত্রী হাসপাতালে চলে যান। বিকেলে বাসায় ফিরে দেখেন দরজা-জানালা বন্ধ। পরে তাঁরা দরজা ভেঙে দেখেন রুমের ভেতর মেয়ে ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে। পুলিশ খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে। পরে একটি চিরকুট পাওয়া যায়, যাতে লেখা ছিল_'আমার এই মৃত্যুর জন্য একমাত্র গিয়াস উদ্দিন দায়ী।'
স্বজনদের অভিযোগ, ধানমণ্ডি নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজ অ্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এইচএসসি মানবিক শাখার দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীকে গিয়াস নামের একটি ছেলে প্রায়ই বিরক্ত করত। একপর্যায়ে গিয়াস হুমকি দিয়ে বলে, তাকে বিয়ে না করলে সপরিবারে ওই ছাত্রীকে হত্যা করা হবে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী রমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। কিন্তু পুলিশ এ বিষয়ে গুরুত্ব দেয়নি। ফলে এর কিছুদিন পরই গিয়াস কয়েকজন সহযোগীর মাধ্যমে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে মগবাজার এলাকায় নিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালায় এবং নগ্ন করে ভিডিওচিত্র ধারণ করে রাখে। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় মেয়েটিকে নানাভাবে হুমকি দিত গিয়াস। এসব সহ্য করতে না পেরে অবশেষে আত্মহননের পথ বেছে নেয় ওই ছাত্রী। স্বজনরা এ ঘটনায় পুলিশের গাফিলতিকে দায়ী করছেন।
এ দিকে জিডির তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার এসআই জামাল হোসেন জানান, জিডির বিষয়ে পুলিশের কোনো গাফিলতি ছিল না। তারা ছেলেটিকে খুঁজে পায়নি।
অন্যদিকে শাহবাগ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। গিয়াসকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে গিয়াসকে ধরতে সম্ভাব্য সব জায়গায় পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাকে ধরতে পারলে রহস্য উদ্ঘাটন হবে এবং প্রকৃত বিষয়টি জানা যাবে।