সুখে নেই এমন চিন্তাই মূল শত্রু। নিজের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ, বিষণ্নতায় ভোগা ও আত্মধিক্কার সুখকে দূরে ঠেলে দেয়। সমাধান মাথা উঁচু করে বাঁচা। চিন্তা, বিষণ্নতা ঝেড়ে ফেলে ইতিবাচক পথে হাঁটা। নিজেকে কেউকেটা করে তোলার প্রয়াসও খারাপ। সহজভাবে উপস্থাপন করুন নিজেকে, সে হোক বন্ধু অথবা অপরিচিত কেউ।
দিনের বেশির ভাগ সময়ই আমাদের নষ্ট হয়, যা করতে পছন্দ করি না তাই করে। যেমন অনেকের হয়তো তার অফিসের কাজের ধারা ভালো লাগে না। তবে জীবন চালিয়ে নেয়ার দায়ভারে তা করে যেতে বাধ্য হয়। তবে এর মধ্যেও বের করতে হবে কী করলে মন আনন্দে ভরে উঠবে। হাজার ব্যস্ততার মধ্যেও সময় বের করতে হবে। সবচেয়ে ভালো উপায় ভালোলাগার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কর্মজীবন ঠিক করা। আপন দক্ষতা ও মেধা কোন কাজের জন্য বেশি উপযোগী, তা ভেবেই কর্মক্ষেত্র নির্ধারণ করা উচিত।
যা নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই তা নিয়ে ভেবে অযথা সময় নষ্ট করবেন না, যা চলে গেছে তা যেতে দিন। মনে করুন তা যাওয়ার জন্যই। আমরা জানি না কয়েক সেকেন্ড পরই কী ঘটতে যাচ্ছে। তাই সবকিছু নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিতভাবে হবে, এ চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। এ প্রক্রিয়ায় নিজেকে সুখী ভাবতে কষ্ট হবে না।
সামনে অনেক সমস্যা থাকতে পারে, এ ভয় থেকে অনেকে নিজেকে পরিবর্তন করতে ভয় পায়। এ ভয়কে জয় করতে হবে। প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করে চলার পথে এগিয়ে যেতে হবে। আবার অনেকেই জানে না তারা ঠিক কী কারণে ভয় পাচ্ছে। এক্ষেত্রে একটু সময় নিয়ে ভাবুন। এরপর যেসব ক্ষেত্রে সমস্যা হবে, সেগুলো কীভাবে দূর করা যায়, সে পথ খুঁজুন। প্রয়োজনে ঘনিষ্ঠ কারো সহযোগিতা নিন।
একটা কথা আছে— ব্যর্থতা বলে কিছু নেই; বরং তা শিক্ষা নেয়ার একটি অন্যতম সুযোগ। কথাটি কিন্তু সত্যি। ভুল ও বোকামিগুলো আমাদের পরোপকারী শিক্ষক— কথাটি আমরা অনেকেই জানি না। কোনো কাজে আমাদের সফলতা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে যতটা না দিকনির্দেশনা দিতে পারে, একটি ভুল তার থেকে কয়েক গুণ বাস্তববাদী করে তোলে। তাই কোনো কাজে ব্যর্থতায় মুষড়ে না পড়ে একে ইতিবাচকভাবে নিন।
স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাজটি শুরু করতে হয়তো সাধারণ সময়ের তুলনায় কিছুটা দেরি হয়ে গেছে। কাজটি শুরু করতে দেরি হয়ে গেল বা আরো আগে করা প্রয়োজন ছিল— এ ধরনের আফসোস বাদ দিন। বয়স কোনো ব্যাপার নয়। কাজ করতে পারছেন— এটিই বড় কথা। আর চেষ্টা করুন মনের খোরাক জোগাতে ব্যতিক্রমী কিছু করার, যা সাদামাটা জীবনে কিছুটা হলেও রঙ ছোঁয়াবে।
সবদিক দিয়ে নিখুঁতভাবে কাজ কখনই হয় না। তাই বলে কি চেষ্টা ছেড়ে দেবেন? না। সক্ষমতা ও সফলতার বিষয়ে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। মেধা ও দক্ষতাকে সঠিকভাবে কাজে লাগান। সঙ্গে নিষ্ঠা ও সততা। শতভাগ না হোক, অন্তত ৯০ শতাংশ নিখুঁত কাজ করতে পারবেন এটি নিশ্চিত।
কথায় আছে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। তাই স্বাস্থ্যের ওপর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়— এমন কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। অতিরিক্ত খাওয়া, পান করা, নিয়ন্ত্রণহীন চাপের কাছেও ঘেঁষবেন না। সবচেয়ে বড় কথা নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন। দুটি উপায়ে তা সম্ভব। এক. নিজেকে নিয়ন্ত্রণ, দুই. অভ্যাস বদল করার ক্ষমতা। আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে চিন্তাধারা ও আচার-আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আর অভ্যাস বদল করার ক্ষমতার মাধ্যমে নেতিবাচক অভ্যাসগুলো আপনি অনায়াসেই ঝেড়ে ফেলতে পারবেন। এ বিষয় দুটিই সুখ ও সুস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।
তাই প্রতিটি পদক্ষেপে সঠিক কিছু আসবে তা ভেবে রাখা ঠিক নয়। কাজ করার আগে সফলতা ও ব্যর্থতা দুটোরই আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন।
- See more at: http://bonikbarta.com/rong-dong/2013/11/09/21749#sthash.SfqDTooq.dpuf