কমিশনের কারোর পরিবারের সদস্য বা পোষ্যরা শেয়ার লেনদেনে সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না_এসইসির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কবির ভুঁইয়া নিজেই এক নির্দেশনায় এ কথা বলেছিলেন। একদিকে নির্দেশনা জারি হচ্ছিল, অন্যদিকে তাঁর স্ত্রী রোখসানা আক্তার চারটি পৃথক বিও অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করেন। শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা এসইসির শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্নীতির মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন এমন আরো অনেকে, যাঁদের ভূমিকা নির্ধারিত ছিল রক্ষকের। কিন্তু তাঁরা হয়ে ওঠেন ভক্ষক। এ তালিকায় স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) কর্মকর্তা ও তাঁদের আত্মীয়সহ বেসরকারি কম্পানির কর্মকর্তারা আছেন।
গত বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রীর কাছে জমা দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নাম এসেছে আনোয়ারুল কবির ভুঁইয়ার স্ত্রী রোখসানা আক্তার, আইসিবির সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক ও বর্তমানের হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক কফিলউদ্দিন আহমেদসহ আবদুস সালাম, আবু সাদত মো. সায়েম, আবদুল মোবিন মোল্লাহ, গোলাম মোস্তফা, আর আই শমসের নামের কয়েক বিনিয়োগকারীর।
নির্দেশনার আড়ালে: প্রতিবেদনের 'দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য ও বিশেষ পর্যবেক্ষণ' শীর্ষক অধ্যায়ের দুর্নীতির চিত্র-১ অংশে এসইসির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কবির ভুঁইয়ার স্ত্রী রোকসানা আখতারের নামে চারটি বিও অ্যাকাউন্ট পরিচালনার তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, রোকসানা আখতার আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, বিএলআই সিকিউরিটিজ, লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ ও এনবিএল সিকিউরিটিজের মাধ্যমে লেনদেন করেন। এসব ব্রোকারেজ হাউসে জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ডিসেম্বর ২০১০-এর মধ্যে কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে। একজন সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে বড় অঙ্কের শেয়ার লেনদেনের কার্যক্রমকে অবৈধ ঘোষণা করে তদন্তে বলা হয়, এসইসির পক্ষ থেকে নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কবির ভুঁইয়া নিজেই একটি নির্দেশনা জারি করেন ২০১০ সালের এপ্রিলে। জারিকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী কমিশনের কোনো কর্মকর্তা বা এর কর্মচারী নিজ বা স্বামী-স্ত্রী, মা-বাবা, ছেলেমেয়ে ও পোষ্যদের নামে প্রাইমারি বা সেকেন্ডারি মার্কেটে সিকিউরিটিজ লেনদেন করা বা এর সঙ্গে কোনোভাবে সম্পৃক্ত থাকতে পারবে না। অথচ নির্দেশনা জারি করে তিনি নিজের স্ত্রীর মাধ্যমেই তা লঙ্ঘন করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বিষয়টি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে আরো বিশদ তদন্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোকসানা আখতার আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক ব্রোকারেজ হাউসের আওতায় তিতাস গ্যাস, সামিট পাওয়ার, লংকাবাংলা ফিন্যান্স, আফতাব অটো ও অন্যান্য কম্পানির শেয়ার কিনেছেন ৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকার। তা বিক্রি করেছেন ১০ কোটি ১১ লাখ টাকায়। লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের আওতায় লংকাবাংলা ফিন্যান্স, সামিট পাওয়ার, তিতাস গ্যাস ও অন্যান্য কম্পানির শেয়ার কেনেন ছয় কোটি ১৩ লাখ টাকার। বিক্রি করেন তিন কোটি ৯১ লাখ টাকায়। আবার বিএলআই সিকিউরিটিজের আওতায় বেঙ্ফার্মার শেয়ার কেনেন চার লাখ ২৭ হাজার টাকায়। বিক্রি করেন চার লাখ ৯৮ হাজার টাকায়। এনবিএল সিকিউরিটিজের আওতায় বেঙ্টেঙ্, যমুনা অয়েল, লংকাবাংলা ও অন্যান্য শেয়ার কেনেন পাঁচ কোটি ছয় লাখ টাকার। বিক্রি করেন চার কোটি ৯৬ লাখ টাকায়।
স্ত্রী-শ্যালকের নামে: দুর্নীতির চিত্র-২ অংশে তুলে ধরা হয় আইসিবির সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক ও বর্তমান হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক কফিলউদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর দুর্নীতির নানা ঘটনা। প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি শেয়ার লেনদেন করেছেন তাঁর স্ত্রী ফারজানা আকতার ও স্ত্রীর ভাই মনসুর বিল্লাহর অ্যাকাউন্টে। তাঁদের লেনদেন সংঘটিত হয়েছে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের অমনিবাস অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। তাঁরা দুজনই আইএফআইসি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। এই কৌশলে দুই মাসে কফিলউদ্দিন অর্জন করেন তিন কোটি টাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ মার্চ বিকেলে তদন্ত কমিটির সামনে তলব করা হয় কফিলউদ্দিন আহমেদকে। এ সময় তিনি কমিটিকে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্লেসমেন্ট ফেসভ্যালুতে নিয়ে বিক্রি করে লাভ করেছেন বলে জানিয়েছিলেন। তিনি মনে করেন, কাজটি দোষের নয়। তাঁর মতে, আইসিবির প্রায় সব কর্মকর্তা-কর্মচারীই শেয়ার লেনদেন করেন। সার্ভিস রুলে কর্মকর্তাদের শেয়ার ব্যবসার অনুমতি আছে কি না তদন্ত কমিটির এমন প্রশ্নের জবাবে তাঁর দাবি_এ বিষয়টি তিনি জানে না এবং সার্ভিস রুলও পড়েননি। স্ত্রী ও শ্যালকের নামে ব্যবসা করা বৈধ কি না এবং স্ত্রী ও শ্যালকের শেয়ার ট্রেডিংয়ের টাকা তাঁর নিজ নামে এফডিআর হলো কেন_তদন্ত দলের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কিছু বলতে পারেননি। কফিল উদ্দিন দাবি করেন, তিনি ঠিকভাবে আয়কর দিয়েছেন। এ কর্মকর্তার দুর্নীতি প্রসঙ্গে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন ডিজিএম (আইসিবি) কী করে দুই মাসে এত বড় অঙ্কের টাকা জমা করেন, তা পরীক্ষা করা যেতে পারে। যেহেতু তিনি বর্তমানে এইচবিএফসির মহাব্যবস্থাপক, তাই অর্থ মন্ত্রণালয় তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করতে পারে। বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনেও পাঠানো যেতে পারে।
কফিল উদ্দিনের শ্যালক ২০১০ সালের ২২ মার্চ শেয়ার অ্যাকাউন্ট থেকে ২০৫৬৬৯৯ নম্বর চেকের মাধ্যমে আইএফআইসি ব্যাংক হিসাবে ৭২ লাখ টাকা জমা করেন এবং ওই টাকা একই বছরের ২৪ মার্চ উত্তোলন করে দুটি এফডিআর করেন এনসিসি ব্যাংকের মতিঝিল শাখায়। কফিল উদ্দিনের নামে ৩৬ লাখ টাকা এবং ফারজানা আকতারের নামে ৩৬ লাখ টাকার এফডিআর। তদন্তে বলা হয়, মনসুর বিল্লাহর নামে 'ডামি' অ্যাকাউন্ট খোলা হয় এবং এর প্রকৃত সুবিধাভোগী ছিলেন কফিলউদ্দিন চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা আকতার। একই ভাবে একই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি মনসুর বিল্লাহ ২০৫৬০৯৩ এবং ২০৫৬০৮৭ নম্বর চেকের মাধ্যমে ৭০ লাখ টাকা জমা করেন এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি একই অ্যাকাউন্ট থেকে ৮০ লাখ টাকা উত্তোলন করে আইএফআইসি ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় ফারজানা আকতারের নামে ৪০ লাখ করে মোট ৮০ লাখ টাকার দুটি এফডিআর করে দেন। একই প্রক্রিয়ায় ২০১০ সালের মার্চ মাসে আইডিএলসি ফাইন্যান্স থেকে ফারজানা আকতারের ইনভেস্টর্স অ্যাকাউন্টের টাকা হাতবদল হয়ে তাঁর স্বামী কফিল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর যমুনা ও এঙ্মি ব্যাংকে তিনটি ফিঙ্ড ডিপোজিটে মোট এক কোটি টাকা জমা করা হয়। ফারজানা আকতারের নামে এনসিসি ব্যাংক মতিঝিল শাখায় দুটি এফডিআরে ৬০ লাখ টাকা জমা হয়। এভাবে মাত্র দুই মাসের মধ্যে কফিলউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রীর নামে এফডিআর হয়েছে তিন কোটি টাকা এবং হিসাবে আরো জমা আছে ১৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ দুই মাসে তাঁর অর্জন তিন কোটি টাকা।
হাত ঘুরিয়ে দাম বৃদ্ধি : শেয়ার বিভাজনের কারণে কোনো কোনো ট্রেডার নিজেদের মধ্যে অধিক লেনদেনের (বাল্ক ট্রানজেকশন) মাধ্যমে অতি সহজে আর্টিফিশিয়াল অ্যাকটিভ ট্রেডিং পরিবেশ সৃষ্টি করেন। এর ফলে শেয়ারবাজারে মূল্য বেড়ে যায় এবং সেই সুযোগে কারসাজির হোতারা শেয়ার বিক্রি করে বেরিয়ে আসেন। এ রকম কিছু নমুনাও তদন্ত প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। তাঁরা হলেন সৈয়দ সিরাজুদ্দৌলা এবং সহযোগীরা। তাঁর স্ত্রী রাশেদা আক্তার মায়া, হাবিবুর রহমান, ইয়াকুব আলী খোন্দকার, সারা খন্দকার, ইয়াসিন খন্দকার ও আনোয়ার খান। শেষোক্ত ব্যক্তি মডার্ন হসপিটাল, মডার্ন ফার্মা ও হাজি শাখাওয়াত আনোয়ার চক্ষু হাসপাতালের মালিক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ারে ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত 'সিরিয়াল ট্রেডিং'-এর মাধ্যমে শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি ঘটানোতে দুজনের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। এঁরা হলেন দুই ভাই আবু সাদত মো. সায়েম ও আবদুল মোবিন মোল্লাহ। তাঁরা নিজ নিজ এবং যৌথ বিও অ্যাকাউন্টে লেনদেন করেন। আটটি ভিন্ন বিও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রতিদিন ২৫ শতাংশ শেয়ারের লেনদেন তাঁরাই সম্পন্ন করেন এবং মূল্য বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখেন। এ সময় শেয়ারপ্রতি গড় মূল্য ৭৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১,৩৪৫ টাকা হয়। এতে ১৬ দিনে তাঁরা চার কোটি ১৪ লাখ টাকা মুনাফা করেন।
The government should not focus on the Securities and Exchange Commission (SEC) alone to blame for the country’s biggest share market scam. Bangladesh Bank could not avoid its regulatory lapses too.
Talking to daily sun, experts put forward the views as their eyes shifted to the central bank along with the SEC, which has become the scapegoat by the probe body.
"The role of Bangladesh Bank should have been more strong and timely in dealing with the commercial banks’ involvement in the market," said economist Dr Debapriya Bhattachariya.
The experts observed that until now all blames fell on only SEC as a regulator.
Khondaker Ibrahim Khaled, probe committee chief, said he highlighted the regulatory lapses by the central bank officials in some decision making process in 2009 and 2010, which resulted in market bubbles.
Many observers, including the Finance Ministry officials, said the probe report slightly criticised the central bank activities and held its responsibility for the disaster. They expected further criticisms on the BB role.
Ibrahim Khaled, however, said that he tried his best to find out the responsibilities of regulators and share traders, explicitly in a very short period of time.
Economist Debapriya Bhattacharya observed that the BB could not avoid the blame. "No doubt, SEC has played the most devastating role."
However, he said other agencies and institutions having stakes in the share market possibly failed to perform the need of oversight functions.
"For example, BB should have come down more strongly and much earlier to arrest the over exposure of the commercial banks to the market," he added.
Because of the overexposure of some commercial banks, the share market experienced bullish trend in most part of the last year. The general index of Dhaka Stock Exchange (DSE) reached highest ever level at 8,918 points on December 5 last year from 4,568 on January 3, 2001.
The country’s elderly and female savers and hundreds of thousands of unemployed young people have entered into the overheated market as a record 1.57 million Beneficiary Owners (BO) accounts, more than half of the total investors, entered into the market in 2010.
Debapriya pointed out that the BB should also have more effectively track down the money commercial banks had invested in the share market.
গত বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রীর কাছে জমা দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নাম এসেছে আনোয়ারুল কবির ভুঁইয়ার স্ত্রী রোখসানা আক্তার, আইসিবির সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক ও বর্তমানের হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক কফিলউদ্দিন আহমেদসহ আবদুস সালাম, আবু সাদত মো. সায়েম, আবদুল মোবিন মোল্লাহ, গোলাম মোস্তফা, আর আই শমসের নামের কয়েক বিনিয়োগকারীর।
নির্দেশনার আড়ালে: প্রতিবেদনের 'দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট তথ্য ও বিশেষ পর্যবেক্ষণ' শীর্ষক অধ্যায়ের দুর্নীতির চিত্র-১ অংশে এসইসির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কবির ভুঁইয়ার স্ত্রী রোকসানা আখতারের নামে চারটি বিও অ্যাকাউন্ট পরিচালনার তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, রোকসানা আখতার আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, বিএলআই সিকিউরিটিজ, লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ ও এনবিএল সিকিউরিটিজের মাধ্যমে লেনদেন করেন। এসব ব্রোকারেজ হাউসে জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ডিসেম্বর ২০১০-এর মধ্যে কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য প্রতিবেদনে দেওয়া হয়েছে। একজন সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে বড় অঙ্কের শেয়ার লেনদেনের কার্যক্রমকে অবৈধ ঘোষণা করে তদন্তে বলা হয়, এসইসির পক্ষ থেকে নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কবির ভুঁইয়া নিজেই একটি নির্দেশনা জারি করেন ২০১০ সালের এপ্রিলে। জারিকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী কমিশনের কোনো কর্মকর্তা বা এর কর্মচারী নিজ বা স্বামী-স্ত্রী, মা-বাবা, ছেলেমেয়ে ও পোষ্যদের নামে প্রাইমারি বা সেকেন্ডারি মার্কেটে সিকিউরিটিজ লেনদেন করা বা এর সঙ্গে কোনোভাবে সম্পৃক্ত থাকতে পারবে না। অথচ নির্দেশনা জারি করে তিনি নিজের স্ত্রীর মাধ্যমেই তা লঙ্ঘন করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বিষয়টি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে আরো বিশদ তদন্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোকসানা আখতার আল আরাফা ইসলামী ব্যাংক ব্রোকারেজ হাউসের আওতায় তিতাস গ্যাস, সামিট পাওয়ার, লংকাবাংলা ফিন্যান্স, আফতাব অটো ও অন্যান্য কম্পানির শেয়ার কিনেছেন ৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকার। তা বিক্রি করেছেন ১০ কোটি ১১ লাখ টাকায়। লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের আওতায় লংকাবাংলা ফিন্যান্স, সামিট পাওয়ার, তিতাস গ্যাস ও অন্যান্য কম্পানির শেয়ার কেনেন ছয় কোটি ১৩ লাখ টাকার। বিক্রি করেন তিন কোটি ৯১ লাখ টাকায়। আবার বিএলআই সিকিউরিটিজের আওতায় বেঙ্ফার্মার শেয়ার কেনেন চার লাখ ২৭ হাজার টাকায়। বিক্রি করেন চার লাখ ৯৮ হাজার টাকায়। এনবিএল সিকিউরিটিজের আওতায় বেঙ্টেঙ্, যমুনা অয়েল, লংকাবাংলা ও অন্যান্য শেয়ার কেনেন পাঁচ কোটি ছয় লাখ টাকার। বিক্রি করেন চার কোটি ৯৬ লাখ টাকায়।
স্ত্রী-শ্যালকের নামে: দুর্নীতির চিত্র-২ অংশে তুলে ধরা হয় আইসিবির সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক ও বর্তমান হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক কফিলউদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর দুর্নীতির নানা ঘটনা। প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি শেয়ার লেনদেন করেছেন তাঁর স্ত্রী ফারজানা আকতার ও স্ত্রীর ভাই মনসুর বিল্লাহর অ্যাকাউন্টে। তাঁদের লেনদেন সংঘটিত হয়েছে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের অমনিবাস অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। তাঁরা দুজনই আইএফআইসি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। এই কৌশলে দুই মাসে কফিলউদ্দিন অর্জন করেন তিন কোটি টাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ মার্চ বিকেলে তদন্ত কমিটির সামনে তলব করা হয় কফিলউদ্দিন আহমেদকে। এ সময় তিনি কমিটিকে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্লেসমেন্ট ফেসভ্যালুতে নিয়ে বিক্রি করে লাভ করেছেন বলে জানিয়েছিলেন। তিনি মনে করেন, কাজটি দোষের নয়। তাঁর মতে, আইসিবির প্রায় সব কর্মকর্তা-কর্মচারীই শেয়ার লেনদেন করেন। সার্ভিস রুলে কর্মকর্তাদের শেয়ার ব্যবসার অনুমতি আছে কি না তদন্ত কমিটির এমন প্রশ্নের জবাবে তাঁর দাবি_এ বিষয়টি তিনি জানে না এবং সার্ভিস রুলও পড়েননি। স্ত্রী ও শ্যালকের নামে ব্যবসা করা বৈধ কি না এবং স্ত্রী ও শ্যালকের শেয়ার ট্রেডিংয়ের টাকা তাঁর নিজ নামে এফডিআর হলো কেন_তদন্ত দলের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কিছু বলতে পারেননি। কফিল উদ্দিন দাবি করেন, তিনি ঠিকভাবে আয়কর দিয়েছেন। এ কর্মকর্তার দুর্নীতি প্রসঙ্গে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন ডিজিএম (আইসিবি) কী করে দুই মাসে এত বড় অঙ্কের টাকা জমা করেন, তা পরীক্ষা করা যেতে পারে। যেহেতু তিনি বর্তমানে এইচবিএফসির মহাব্যবস্থাপক, তাই অর্থ মন্ত্রণালয় তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করতে পারে। বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনেও পাঠানো যেতে পারে।
কফিল উদ্দিনের শ্যালক ২০১০ সালের ২২ মার্চ শেয়ার অ্যাকাউন্ট থেকে ২০৫৬৬৯৯ নম্বর চেকের মাধ্যমে আইএফআইসি ব্যাংক হিসাবে ৭২ লাখ টাকা জমা করেন এবং ওই টাকা একই বছরের ২৪ মার্চ উত্তোলন করে দুটি এফডিআর করেন এনসিসি ব্যাংকের মতিঝিল শাখায়। কফিল উদ্দিনের নামে ৩৬ লাখ টাকা এবং ফারজানা আকতারের নামে ৩৬ লাখ টাকার এফডিআর। তদন্তে বলা হয়, মনসুর বিল্লাহর নামে 'ডামি' অ্যাকাউন্ট খোলা হয় এবং এর প্রকৃত সুবিধাভোগী ছিলেন কফিলউদ্দিন চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী ফারজানা আকতার। একই ভাবে একই বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি মনসুর বিল্লাহ ২০৫৬০৯৩ এবং ২০৫৬০৮৭ নম্বর চেকের মাধ্যমে ৭০ লাখ টাকা জমা করেন এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি একই অ্যাকাউন্ট থেকে ৮০ লাখ টাকা উত্তোলন করে আইএফআইসি ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় ফারজানা আকতারের নামে ৪০ লাখ করে মোট ৮০ লাখ টাকার দুটি এফডিআর করে দেন। একই প্রক্রিয়ায় ২০১০ সালের মার্চ মাসে আইডিএলসি ফাইন্যান্স থেকে ফারজানা আকতারের ইনভেস্টর্স অ্যাকাউন্টের টাকা হাতবদল হয়ে তাঁর স্বামী কফিল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর যমুনা ও এঙ্মি ব্যাংকে তিনটি ফিঙ্ড ডিপোজিটে মোট এক কোটি টাকা জমা করা হয়। ফারজানা আকতারের নামে এনসিসি ব্যাংক মতিঝিল শাখায় দুটি এফডিআরে ৬০ লাখ টাকা জমা হয়। এভাবে মাত্র দুই মাসের মধ্যে কফিলউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রীর নামে এফডিআর হয়েছে তিন কোটি টাকা এবং হিসাবে আরো জমা আছে ১৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ দুই মাসে তাঁর অর্জন তিন কোটি টাকা।
হাত ঘুরিয়ে দাম বৃদ্ধি : শেয়ার বিভাজনের কারণে কোনো কোনো ট্রেডার নিজেদের মধ্যে অধিক লেনদেনের (বাল্ক ট্রানজেকশন) মাধ্যমে অতি সহজে আর্টিফিশিয়াল অ্যাকটিভ ট্রেডিং পরিবেশ সৃষ্টি করেন। এর ফলে শেয়ারবাজারে মূল্য বেড়ে যায় এবং সেই সুযোগে কারসাজির হোতারা শেয়ার বিক্রি করে বেরিয়ে আসেন। এ রকম কিছু নমুনাও তদন্ত প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। তাঁরা হলেন সৈয়দ সিরাজুদ্দৌলা এবং সহযোগীরা। তাঁর স্ত্রী রাশেদা আক্তার মায়া, হাবিবুর রহমান, ইয়াকুব আলী খোন্দকার, সারা খন্দকার, ইয়াসিন খন্দকার ও আনোয়ার খান। শেষোক্ত ব্যক্তি মডার্ন হসপিটাল, মডার্ন ফার্মা ও হাজি শাখাওয়াত আনোয়ার চক্ষু হাসপাতালের মালিক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ারে ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত 'সিরিয়াল ট্রেডিং'-এর মাধ্যমে শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি ঘটানোতে দুজনের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। এঁরা হলেন দুই ভাই আবু সাদত মো. সায়েম ও আবদুল মোবিন মোল্লাহ। তাঁরা নিজ নিজ এবং যৌথ বিও অ্যাকাউন্টে লেনদেন করেন। আটটি ভিন্ন বিও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রতিদিন ২৫ শতাংশ শেয়ারের লেনদেন তাঁরাই সম্পন্ন করেন এবং মূল্য বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখেন। এ সময় শেয়ারপ্রতি গড় মূল্য ৭৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১,৩৪৫ টাকা হয়। এতে ১৬ দিনে তাঁরা চার কোটি ১৪ লাখ টাকা মুনাফা করেন।
The government should not focus on the Securities and Exchange Commission (SEC) alone to blame for the country’s biggest share market scam. Bangladesh Bank could not avoid its regulatory lapses too.
Talking to daily sun, experts put forward the views as their eyes shifted to the central bank along with the SEC, which has become the scapegoat by the probe body.
"The role of Bangladesh Bank should have been more strong and timely in dealing with the commercial banks’ involvement in the market," said economist Dr Debapriya Bhattachariya.
The experts observed that until now all blames fell on only SEC as a regulator.
Khondaker Ibrahim Khaled, probe committee chief, said he highlighted the regulatory lapses by the central bank officials in some decision making process in 2009 and 2010, which resulted in market bubbles.
Many observers, including the Finance Ministry officials, said the probe report slightly criticised the central bank activities and held its responsibility for the disaster. They expected further criticisms on the BB role.
Ibrahim Khaled, however, said that he tried his best to find out the responsibilities of regulators and share traders, explicitly in a very short period of time.
Economist Debapriya Bhattacharya observed that the BB could not avoid the blame. "No doubt, SEC has played the most devastating role."
However, he said other agencies and institutions having stakes in the share market possibly failed to perform the need of oversight functions.
"For example, BB should have come down more strongly and much earlier to arrest the over exposure of the commercial banks to the market," he added.
Because of the overexposure of some commercial banks, the share market experienced bullish trend in most part of the last year. The general index of Dhaka Stock Exchange (DSE) reached highest ever level at 8,918 points on December 5 last year from 4,568 on January 3, 2001.
The country’s elderly and female savers and hundreds of thousands of unemployed young people have entered into the overheated market as a record 1.57 million Beneficiary Owners (BO) accounts, more than half of the total investors, entered into the market in 2010.
Debapriya pointed out that the BB should also have more effectively track down the money commercial banks had invested in the share market.