তিনি ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে নামী ব্র্যান্ড অ্যাপলের জনক। সিলিকন ভ্যালির মুকুটধারী সম্রাট। তার প্রজন্মের ঈর্ষণীয় প্রধান নির্বাহী, তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণা। সেই স্টিভ জবসের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এবার মুখ খুললেন তার সাবেক প্রেমিকা ক্রিসান ব্রেনান। তার আত্মজীবনীতে এমন এক স্টিভ জবসকে পাওয়া যাবে, যে কথা কারো ধারণাতেও ছিল না। তাতে তিনি লিখেছেন, দরজার আড়ালে জবস ছিলেন যৌনপীড়ক, ওপরে ফিটফাট হলেও ভেতরে ফাঁপা এবং বিকারগ্রস্ত মিথ্যাবাদী। সত্তরের দশকে ক্রিসান ও জবসের সম্পর্ক ছিল অম্ল-মধুর। জবসের প্রথম সন্তানের জননীও ক্রিসান। তার বর্ণনায় জবস ছিলেন, খারাপ বাল্যকালের আবেগী ঘূর্ণাবর্তে বন্দী। ২০১১ সালে ৫৬ বছর বয়সে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান জবস।
সাবেক প্রেমিকার বই ‘দি বাইট ইন দ্য অ্যাপল’-এ তাকে ভুল কাজের জন্য বারবার আক্রান্ত হতে হয়েছে। ক্রিসান ব্রেনানের বইটি এ মাসেই প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। এতে বলা হয়েছে, অ্যামেরিকার কর্পোরেট জগতের সবচেয়ে গোছানো ক্যাপ্টেন ব্যক্তিগত জীবনে কীভাবে বখাটের মতো আচরণ করতেন। ব্রেনানের বইটি জবসের পরিবারের সঙ্গে তার সম্পর্ক আবার উত্তপ্ত করে তুলতে পারে। স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে জবসের ওপর কথা বলার কথা ছিল তার। কিন্তু রোলিংস্টোন ম্যাগাজিনকে জবস ও তার সম্পর্ক বিষয়ে তথ্য বলার কারণে সে আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। 'দি বাইট ইন দ্য অ্যাপলে'র সাবটাইটেল দেয়া হয়েছে ‘স্টিভ জবসের সঙ্গে আমার জীবনের স্মৃতিকথা’। বইয়ে ব্রেনান লিখেছেন, ক্যালিফোর্নিয়ার মোনটেরেতে বসবাসরত তরুণ পেইন্টার ও গ্রাফিক ডিজাইনার জবস ছিলেন ‘বেমানান মেধাবী’। তিনি মনে করতেন তরুণ বয়সেই মারা যাবেন। সময় যাচ্ছিল এবং তিনিও ইতিবাচক স্বৈরাচারি হয়ে উঠছিলেন। অ্যাপল যখন বেড়ে ওঠে তখন জবসের মধ্যে নিজের নাম জাহির করার প্রবণতাও বেড়ে ওঠে। সত্তর দশকের শুরুতে আটারি কম্পিউটার্সে কাজ করার সময় কলিগরা বলেছিল, তারা জবসের সঙ্গে কাজ করবে না। কারণ তার গা থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। ব্রেনানের মতে, এটা সত্য ছিল না। আমি শুনেছিলাম, জবস রাতের শিফটে চলে গিয়েছিলেন কারণ কলিগরা মনে করতো তিনি নেতিবাচক ও ক্ষতিকর। ব্রেনান ও জবস ক্যালিফোর্নিয়ার কাপার্টিনোর হোমস্টেড হাইস্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন। ওই শহরেই অ্যাপলের হেডকোয়ার্টার তৈরি হয়েছিল। এখনও আছে। জবস ও তার এক বন্ধু একটি গ্যারেজ থেকে অ্যাপল শুরু করার সময় তারা দুজন লিভটুগেদার শুরু করেন। ৫ বছর পর যখন তাদের ছাড়াছাড়ি হয় তখন ব্রেনান গর্ভবতী। ১৯৭৮ সালে ব্রেনানের যে সন্তান হয় তাকে নিজের সন্তান বলে স্বীকৃতি দিতে চাননি জবস। পরে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে জবস ছিলেন ভুল অবস্থানে।