বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) জাহাজ বহর থেকে বিক্রি করা হচ্ছে পাঁচটি জাহাজ। এসব জাহাজের পেছনে কর্তৃপক্ষ বছরের পর বছর লোকসান দেওয়ায় তা বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে বিএসসি। এদিকে বিএসসির জাহাজ বিক্রির উদ্যোগের বিরোধিতা করেছেন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটির সিম্যানস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
জানা গেছে, বিএসসির ১৩ জাহাজ থেকে পাঁচটি জাহাজ (বাংলার উর্মি, বাংলার রবি, বাংলার গৌরব, বাংলার মুখ ও বাংলার মায়া) বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে তিনটি জাহাজ বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বিক্রির তালিকায় থাকা পাঁচটি জাহাজের গড় বয়স প্রায় ২৯ বছর। বেশ কয়েক বছর এসব জাহাজ বাণিজ্যিকভাবে পরিচালনার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক নৌসংস্থা (আইএমও) প্রণীত ইন্টারন্যাশনাল সেফটি ম্যানেজমেন্ট (আইএসএম ) কোড অনুযায়ী বিএসসির এই পাঁচটি জাহাজের মেয়াদ পাঁচ বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে বিএসসির বহরে সচল রয়েছে আটটি জাহাজ। এসব জাহাজের গড় বয়স ২৫ বছরের বেশি।
পুরনো জাহাজ বিক্রি প্রসঙ্গে বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মকসুমুল কাদের কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বিএসসির অলাভজনক জাহাজগুলো ক্রমান্বয়ে বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পাঁচটি জাহাজের পেছনে জ্বালানি, রক্ষণাবেক্ষণ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাবদ বিএসসির দৈনিক লোকসান প্রায় ২৫ হাজার ডলার অর্থাৎ ২০ লাখ টাকা। এ ছাড়া এসব জাহাজ এখন আর চলাচলের উপযোগী নয়।' তিনি জানান, পুরনো জাহাজ বিক্রির টাকা দিয়ে নতুন জাহাজ কেনার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিএসসির কর্মকর্তারা জানান, গত ২৭ আগস্ট বাংলার রবি জাহাজের বিক্রির দরপত্র খোলা হয়েছে। এতে ছয়টি প্রতিষ্ঠান জাহাজ কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকায় জাহাজ কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। পরবর্তীতে ২ সেপ্টেম্বর বাংলার মুখ জাহাজের বিক্রির দরপত্র খোলা হয়েছে। এতে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিয়েছে। সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠান প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকায় জাহাজটি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর বাংলার গৌরব জাহাজের দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। পর্যায়ক্রমে বাকি দুটি (বাংলার উর্মি ও বাংলার মায়া) জাহাজ বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
এদিকে বিএসসির সিম্যানস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওদুদ জাহাজ বিক্রির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেন, 'নতুন জাহাজ কেনার আগে পুরনো জাহাজ বিক্রি করা হলে রাষ্ট্রায়ত্ত এই প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৫০ নাবিক এক সঙ্গে চাকরি হারাবেন।'