শেয়ারবাজার :::: আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় আসে, তখনই শেয়ারবাজারে ধস নামে। দেশের অর্থনীতিসহ সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে এই সরকার। ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার এসব কথা উল্লেখ করে সরকারকে কেলেঙ্কারির দায় মাথায় নিয়ে বিদায় হতে বলেছেন। এ সময় মধ্যবর্তী নির্বাচনেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল রোববার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ ‘শেয়ারবাজারে দুর্নীতি ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষা’ শীর্ষক সেমিনারে এম কে আনোয়ার এসব কথা বলেন।
সেমিনারে অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগসহ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে আট দফা গণদাবি উত্থাপন করা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিষদের সভাপতি ও দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। নির্ধারিত আলোচক ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহবুবউল্লাহ, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টু, ফরহাদ মজহার প্রমুখ।
সেমিনারে বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন, তবে কোনো কথা বলেননি।
গণদাবির মধ্যে রয়েছে: অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্তাব্যক্তিদের পদত্যাগ; ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের কাছে সরকারের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা; লুটপাটের অর্থ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের ফেরত; তাঁদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া; তাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার; লুটপাটকারীদের বিচার; বাজার কার্যক্রম সম্পর্কে স্বচ্ছ নীতিমালা প্রণয়ন এবং এসইসিতে দুর্নীতি ও দলীয়করণের অবসান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের দিন ২০০৯ সালের ৬ জুন বাজারের সূচক ২৭৫৭ পয়েন্ট, দৈনিক লেনদেন ৩৭৮ দশমিক ৮৭ কোটি টাকা এবং বাজার মূলধন ছিল এক লাখ চার হাজার ২৯৭ কোটি টাকা। ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর সূচক বেড়ে ৮৯১৯ পয়েন্ট, লেনদেন ৩২৪৯ কোটি টাকা এবং বাজার মূলধন দাঁড়ায় তিন লাখ ৬৮ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা। ২ জুনের হিসাবে সূচক ৫৭০০ পয়েন্ট, লেনদেন ৬০৬ কোটি টাকা এবং বাজার মূলধন দুই লাখ ৬৮ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা। স্রেফ এক লাখ কোটি টাকা বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে।
শেয়ারবাজারের বেলুন তৈরিতে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকা ছিল বলে প্রবন্ধে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, অর্থমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন, বিও হিসাব দ্বিগুণ করবেন। গ্রামগঞ্জে ব্রোকারেজ হাউস ছড়িয়ে দিয়ে বেশি পরিমাণ মানুষকে বাজারের সঙ্গে জড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। কারসাজির নতুন নতুন পদ্ধতি বের করা হয়েছে। যেমন: বুক বিল্ডিং, অভিহিত মূল্য পরিবর্তন, সরাসরি তালিকাভুক্তি, অগ্রাধিকার শেয়ার, প্লেসমেন্ট ইত্যাদি।
এম কে আনোয়ার কেলেঙ্কারির দায় মাথায় নিয়ে বর্তমান সরকারকে বিদায় নিয়ে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ’৯৬ সালের পতনের পর ইকোনমিস্ট পত্রিকায় ‘নির্দোষদের জবাই করা হয়েছে’ বলে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল। এবারকার শিরোনাম হতে পারে ‘নতুন করে কিছু নির্দোষকে কসাইখানায় পাঠানো হয়েছে’।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শেয়ারবাজারের এবারের পতন বাংলাদেশের অর্থনীতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। এই বিপর্যয়ের পেছনে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, এসইসি, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, কিছু মন্ত্রীর পরিবার ও ব্যবসায়ী দল। বাংলাদেশ ফান্ডের মাধ্যমে চুরির তৃতীয় রাউন্ডের খেলা শুরু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই খেলা কখন শেষ হবে কেউ জানে না।’
ড. মাহবুবউল্লাহ বলেন, ১৯৯৬ সালের শেয়ার কেলেঙ্কারির ঘটনায় মামলা হলেও কোনো বিচার হয়নি। এতে দুর্বৃত্তদের দুঃসাহস অনেক বেড়ে গেছে এবং এবারের ঘটনা ’৯৬ থেকেও ভয়াবহ।
মাহবুবউল্লাহ বলেন, ‘লুটেরার দল শেয়ারবাজারকে টাকা কামানোর হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, পাচার হচ্ছে লুটের অর্থ। নইলে হঠাৎ করে কী এমন হলো যে বিশ্বজুড়ে যেখানে ডলারের দাম কমছে, তার উল্টো ঘটনা ঘটছে বাংলাদেশে?’
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘শেয়ারবাজারের মাধ্যমে সরকারি দলের লোকেরা দুর্নীতি নয়, বরং ডাকাতি করেছে। এই ডাকাতির যদি বিচার না হয়, তাহলে যতই রূপকল্প, রূপগল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হোক না কেন, একদিন কিন্তু ঘুম ভাঙবে এবং ছেলে বড় হবে।’
ফরহাদ মজহার বলেন, শুধু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী নন, এ দেশের কৃষক ও শ্রমিকদের জন্য আজ কথা বলার কেউ নেই। জাতীয়তাবাদী দলকে সাংগঠনিক শক্তি অর্জন করতে হবে এবং জাতীয় অর্থনীতি বিকাশের পথে যেতে হবে। তিনি বলেন, সেমিনারে খালেদা জিয়ার উপস্থিতিই দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর নীতিগত অবস্থান প্রমাণ করছে।
Bangladesh Bank has directed public banks to immediately open accounts for people enjoying benefits under social security programmes run by the social welfare directorate.
In a directive yesterday, the central bank said people enjoying such benefits, including the elderly persons' pension and allowances for insolvent disabled and widows, can open bank accounts in their names by depositing Tk 10 against their national identity cards and pension payment orders.
Such bank accounts are aimed at making the distribution of allowance easier and hassle-free and ensuring transparency, the central bank said.
There will be no obligation for maintaining a minimum balance in these accounts, and no charge or fees could be charged, according to the central bank.
In cases where cheque books are inadequate, the transactions into these accounts can be done through voucher instead of cheque books.