GET UP AND GO
1st part
এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি খতিয়ে দেখেই ব্যাংকের অভ্যন্তরে ভিজিলেন্স টিম গঠন করে প্রতিটি বিভাগে বিভাগে তল্লাশি চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভ্যন্তরে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করাসহ ব্যাপক হারে তদারকি বাড়ানো হয়েছে। দৈনিক দু’ থেকে তিনবার সব কর্মকর্তাদের উপস্থিতি খতিয়ে দেখা এবং সন্ধ্যা ৬ পর্যন্ত ব্যাংকের সব কর্মকর্তা নিজ আসনে আছেন কি-না তাও দেখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে হাজিরা খাতায় অভিযান চালানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রায় ২০ শতাংশ কর্মকর্তা তাদের নির্দিষ্ট কাজ রেখে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করায় এ ধরনের কঠোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক, তফসিলি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের একাধিক কর্মকর্তা রয়েছেন যারা পুঁজিবাজার সম্পর্কে বিভিন্ন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনেক গোপন তথ্য ফাঁস করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি তারা নিজেরাও গোপন খবরের ভিত্তিতেই অধিক হারে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেন। এসব কর্মকর্তারা আবার নিজেদের শেয়ার বিক্রি করার লক্ষ্যে বাজারে মূল্যবৃদ্ধির বিভিন্ন গুজবও ছড়িয়ে থাকেন। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা স্বাভাবিকভাবেই ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের কথা বিশ্বাস করে নামসর্বস্ব বা অপেক্ষাকৃত কম মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির শেয়ার বিনিয়োগ করে তাদের স্বল্প পুুঁজি হারিয়ে পথে বসেন।
এতে পুঁজিবাজার সম্পর্কে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মাঝে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয়। এসব বিষয় বিবেচনা করে এবং কর্মঘণ্টা বাঁচানোর লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোর হচ্ছে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জগলুল করিম বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ও বেসরকারি একাধিক ব্যাংক রয়েছে যেগুলোর একাধিক কর্মকর্তা কাজে ফাঁকি দিয়ে শেয়ার ব্যবসা করছেন। এটি সংশ্লিষ্ট সব ব্যাংকের জন্য ক্ষতিকর।’
বিষয়টি রোধ বাংলাদেশ ব্যাংকসহ তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের আরও জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তা না হলে ব্যাংকিং খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।’
একাধিক তফসিলি ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের একাধিক কর্মকর্তা রয়েছেন যারা কাজ ফাঁকি দিয়ে গ্রুপ করে শেয়ার ব্যবসা করছেন। এ ক্ষেত্রে তারা ৫ থেকে ৬ জনের একটি গ্রুপ করে কাজ করছেন। এ গ্রুপের মধ্যে একজনকে শেয়ার ব্যবসা করার লক্ষ্যে পুঁজিবাজারে পাঠানো হয়। কিন্তু যে কর্মকর্তা পুঁজিবাজারে যাচ্ছেন তার সব কাজ ওই গ্রুপের অন্য কর্মকর্তারা ভাগাভাগি করে করছেন। এছাড়া কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পুঁজিবাজার সম্পর্কে গোপন খবরকে পুঁজি করে শেয়ার ব্যবসা করছেন। অনেক ক্ষেত্রে তারা নামে-বেনামে অবৈধভাবে শত শত বিও অ্যাকাউন্ট খুলে শেয়ার ব্যবসা করছেন। ফলে তাদের কর্মঘণ্টার অনেক সময়ই শেয়ার ব্যবসায় দিতে হচ্ছে। এতে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাজের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এসব বিষয় কম বেশি প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা জ্ঞাত রয়েছেন।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক হলো দেশের আর্থিক খাতের অভিভাবক। এখানকার কর্মকর্তারা দ ও কর্মঠ হলে দেশের ব্যাংকিং খাত আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। কিন্তু ওই ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যদি তাদের দায়িত্বের অবহেলা করে তাহলে এর দায়ভার পড়বে পুরো আর্থিক খাতের ওপরে।’
এতে দেশের অর্থনীতিতে একটি বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কর্মঘণ্টা ফাঁকি দিয়ে শেয়ার ব্যবসা করা উচিত নয়। এ প্রবণতা পরিহার করা উচিত।’
source
Blog Archive
- ► 2011 (2088)