আগামী ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগকে উৎসাহ প্রদানের
পরামর্শ দিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
সংস্থাটি বলেছে, বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সরকার নিজের টাকা খরচ করবে। তবে ব্যাংক-ব্যবস্থা থেকে বেশি ঋণ নেওয়া সরকারের উচিত হবে না। এটি করতে গেলে ব্যক্তি খাত বাধাগ্রস্ত হবে। কারণ, উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংকে তখন খুব বেশি অর্থ থাকবে না।
ঢাকায় সিপিডির কার্যালয়ে গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ‘জাতীয় বাজেট ২০১২-১৩’ শীর্ষক প্রস্তাবনায় এসব কথা বলা হয়। এতে সিপিডির পক্ষ থেকে আগামী বাজেটের জন্য প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেন সংস্থাটির গবেষণা বিভাগের প্রধান ফাহমিদা খাতুন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও জ্যেষ্ঠ গবেষক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
অনুষ্ঠানে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আগামী বাজেটকে ‘রক্ষণশীলতার সঙ্গে সম্প্রসারণমূলক’ করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি বাজেটেই রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক কিছু পরিপ্রেক্ষিত থাকে। আমাদেরও রয়েছে। সেই বিবেচনায় আগামী বাজেটের লক্ষ্য হওয়া উচিত মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির ধারাকে বেগবান রাখা এবং ব্যক্তি বিনিয়োগকে উৎসাহ দেওয়া।’ ইতিমধ্যে দেশের ব্যক্তি বিনিয়োগের ধারা অনেকটা স্থবির হয়ে গেছে উল্লেখ করে হতাশা প্রকাশ করেন দেবপ্রিয়।
কালোটাকা: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ঢালাওভাবে কালোটাকা সাদা করার সুযোগের বিরোধিতা করে বলেন যে এটা শুধু নৈতিকভাবে বেঠিকই নয়, অর্থনৈতিকভাবেও অযৌক্তিক। তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান খুবই পরিষ্কার। এর ফলে সৎ করদাতারা কর দিতে নিরুৎসাহিত হবেন।’
সম্প্রতি লাইসেন্স দেওয়া নতুন ব্যাংকগুলোর প্রতিটির জন্য যে ৪০০ কোটি টাকা করে দরকার, তা মেটানোর মাধ্যমে যেন কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ কেউ না নিতে পারে, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। আগামী নির্বাচনে যাতে কালোটাকার প্রভাব না পড়ে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানান তিনি।
কালোটাকা প্রসঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কেন একজন প্রকৃত করদাতা ২৫ শতাংশ কর দেবেন, যখন তিনি দেখেন যে দুই বছর পর পর ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকা বৈধ করা যায়?’
এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবে সিপিডি বলেছে, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ যদি দিতেই হয়, তবে বিদ্যমান করের বাইরে নির্দিষ্ট হারে শাস্তিমূলক কর আরোপের মাধ্যমে তা দেওয়া যেতে পারে।
বিভিন্ন প্রস্তাব: মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় রেখে ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়ের সীমা এক লাখ ৮০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা এবং ন্যূনতম আয়কর দুই হাজার থেকে বাড়িয়ে আড়াই হাজার টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে।
আয়কর আইনে মূল্য হস্তান্তর (ট্রান্সফার প্রাইসিং) নামে নতুন ধারা সংযোজনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সিপিডি বলেছে, মূল্য কারচুপির কারণে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ১৮০ কোটি ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বাংলাদেশ।
সিপিডির মতে, বাজেটে কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। তবে এর সুবিধা প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে কি না এবং সঠিকভাবে বিতরণ করা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে অর্থ বিভাগ থেকে সমীক্ষা করা প্রয়োজন।
পোলট্রি খাতের আয়ের ওপর কর রেয়াত ২০১৩ থেকে বাড়িয়ে ২০১৫ সাল পর্যন্ত করার কথা বলেছে সিপিডি। কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে এখন ৩ শতাংশ হারে যে শুল্ক দিতে হয়, তা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করা দরকার বলেও মনে করে সিপিডি।
সিপিডির শিল্প এলাকার শ্রমিকদের জন্য খাদ্য রেশনিংয়ের ব্যবস্থা পুনরায় চালু করা, সাভারে চামড়া শিল্পনগর স্থানান্তরের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা, শিল্পদূষণ কমানোর জন্য তদারকি বাড়াতে বরাদ্দ দেওয়া, পাটের উন্নয়ন ও গবেষণার জন্য বরাদ্দ রাখা এবং ওষুধ শিল্পপার্ক বাস্তবায়নে বরাদ্দ রাখা।
রপ্তানিমুখী নয়, এমন এসএমই শিল্প খাতের মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক হার ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা, হালকা প্রকৌশল খাতের উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দিতে একটি বিশেষ তহবিল গঠন, ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর বিদ্যমান ১৫ শতাংশ কর ও কম্পিউটার সরঞ্জামের ওপর বিদ্যমান কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করে সিপিডি।
জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত বিষয়ে সিপিডি বলেছে, একদিকে বিদ্যুতের সংকট, অন্যদিকে উৎপাদনে বিপুল অঙ্কের ভর্তুকি—এটা সামষ্টিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবর্তে সরকারকে এখন মাঝারি ও বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে মনোযোগী হতে হবে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করার জন্য আগে কয়লানীতি চূড়ান্ত করতে হবে।
জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চিন্তাটি খারাপ ছিল না মন্তব্য করে দেবপ্রিয় বলেন, এর অভিঘাতগুলোর সামগ্রিক মূল্যায়ন হয়নি। এটি এখন গলার ফাঁস হয়ে গেছে। ভালো ফলের সম্ভাবনা ছিল কিন্তু প্রশাসনিক, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ব্যর্থতার অভাবে তা হলো না।
গুরুত্বপূর্ণ সব সড়ক চার লেনে উন্নীত করা এবং বছরব্যাপী নিয়মিত সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছে সিপিডি। পাশাপাশি রেলের ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাবকেও সমর্থন করা হয়েছে। তবে ফাহমিদা খাতুন বলেন, এটি হতে হবে ধাপে ধাপে।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিষয়ে সিপিডি বলেছে, একই সঙ্গে বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে একই ব্যক্তি একাধিক কর্মসূচির সুবিধা ভোগ করছে। তাই সুবিধাভোগীদের জন্য একটি তথ্যভান্ডার তৈরি এবং জেলা পর্যায়ে কত দরিদ্র আছে, সে বিষয়েও সমীক্ষা হওয়া প্রয়োজন। অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থানের মজুরি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে তা বাজারদরের চেয়ে বেশি করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শেয়ারবাজারে প্রত্যেক বেনিফিশিয়ারি ওনার (বিও) হিসাবধারীর জন্য করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকা বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দিয়ে সিপিডি বলেছে, এটি লেনদেনে স্বচ্ছতা আনবে এবং রাজস্ব আদায়ে ভূমিকা রাখবে।
পাঁচটি বার্তা: যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও জাপানের তিন শীর্ষপর্যায়ের মন্ত্রীর সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর থেকে পাঁচটি বার্তা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বার্তাগুলো হচ্ছে: অবকাঠামো ঠিক না হলে বিনিয়োগ বাড়বে না, দুর্নীতি দূরীকরণে সচেষ্ট হতে হবে, মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখতে হবে, সংঘাতের পথ পরিহার করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।
সংস্থাটি বলেছে, বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সরকার নিজের টাকা খরচ করবে। তবে ব্যাংক-ব্যবস্থা থেকে বেশি ঋণ নেওয়া সরকারের উচিত হবে না। এটি করতে গেলে ব্যক্তি খাত বাধাগ্রস্ত হবে। কারণ, উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংকে তখন খুব বেশি অর্থ থাকবে না।
ঢাকায় সিপিডির কার্যালয়ে গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ‘জাতীয় বাজেট ২০১২-১৩’ শীর্ষক প্রস্তাবনায় এসব কথা বলা হয়। এতে সিপিডির পক্ষ থেকে আগামী বাজেটের জন্য প্রস্তাবগুলো তুলে ধরেন সংস্থাটির গবেষণা বিভাগের প্রধান ফাহমিদা খাতুন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও জ্যেষ্ঠ গবেষক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
অনুষ্ঠানে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আগামী বাজেটকে ‘রক্ষণশীলতার সঙ্গে সম্প্রসারণমূলক’ করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি বাজেটেই রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক কিছু পরিপ্রেক্ষিত থাকে। আমাদেরও রয়েছে। সেই বিবেচনায় আগামী বাজেটের লক্ষ্য হওয়া উচিত মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির ধারাকে বেগবান রাখা এবং ব্যক্তি বিনিয়োগকে উৎসাহ দেওয়া।’ ইতিমধ্যে দেশের ব্যক্তি বিনিয়োগের ধারা অনেকটা স্থবির হয়ে গেছে উল্লেখ করে হতাশা প্রকাশ করেন দেবপ্রিয়।
কালোটাকা: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ঢালাওভাবে কালোটাকা সাদা করার সুযোগের বিরোধিতা করে বলেন যে এটা শুধু নৈতিকভাবে বেঠিকই নয়, অর্থনৈতিকভাবেও অযৌক্তিক। তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান খুবই পরিষ্কার। এর ফলে সৎ করদাতারা কর দিতে নিরুৎসাহিত হবেন।’
সম্প্রতি লাইসেন্স দেওয়া নতুন ব্যাংকগুলোর প্রতিটির জন্য যে ৪০০ কোটি টাকা করে দরকার, তা মেটানোর মাধ্যমে যেন কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ কেউ না নিতে পারে, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। আগামী নির্বাচনে যাতে কালোটাকার প্রভাব না পড়ে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানান তিনি।
কালোটাকা প্রসঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘কেন একজন প্রকৃত করদাতা ২৫ শতাংশ কর দেবেন, যখন তিনি দেখেন যে দুই বছর পর পর ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকা বৈধ করা যায়?’
এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবে সিপিডি বলেছে, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ যদি দিতেই হয়, তবে বিদ্যমান করের বাইরে নির্দিষ্ট হারে শাস্তিমূলক কর আরোপের মাধ্যমে তা দেওয়া যেতে পারে।
বিভিন্ন প্রস্তাব: মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় রেখে ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়ের সীমা এক লাখ ৮০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা এবং ন্যূনতম আয়কর দুই হাজার থেকে বাড়িয়ে আড়াই হাজার টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে।
আয়কর আইনে মূল্য হস্তান্তর (ট্রান্সফার প্রাইসিং) নামে নতুন ধারা সংযোজনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সিপিডি বলেছে, মূল্য কারচুপির কারণে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ১৮০ কোটি ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বাংলাদেশ।
সিপিডির মতে, বাজেটে কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। তবে এর সুবিধা প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে কি না এবং সঠিকভাবে বিতরণ করা হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে অর্থ বিভাগ থেকে সমীক্ষা করা প্রয়োজন।
পোলট্রি খাতের আয়ের ওপর কর রেয়াত ২০১৩ থেকে বাড়িয়ে ২০১৫ সাল পর্যন্ত করার কথা বলেছে সিপিডি। কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে এখন ৩ শতাংশ হারে যে শুল্ক দিতে হয়, তা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করা দরকার বলেও মনে করে সিপিডি।
সিপিডির শিল্প এলাকার শ্রমিকদের জন্য খাদ্য রেশনিংয়ের ব্যবস্থা পুনরায় চালু করা, সাভারে চামড়া শিল্পনগর স্থানান্তরের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা, শিল্পদূষণ কমানোর জন্য তদারকি বাড়াতে বরাদ্দ দেওয়া, পাটের উন্নয়ন ও গবেষণার জন্য বরাদ্দ রাখা এবং ওষুধ শিল্পপার্ক বাস্তবায়নে বরাদ্দ রাখা।
রপ্তানিমুখী নয়, এমন এসএমই শিল্প খাতের মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক হার ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করা, হালকা প্রকৌশল খাতের উদ্যোক্তাদের স্বল্প সুদে ঋণ দিতে একটি বিশেষ তহবিল গঠন, ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর বিদ্যমান ১৫ শতাংশ কর ও কম্পিউটার সরঞ্জামের ওপর বিদ্যমান কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করে সিপিডি।
জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত বিষয়ে সিপিডি বলেছে, একদিকে বিদ্যুতের সংকট, অন্যদিকে উৎপাদনে বিপুল অঙ্কের ভর্তুকি—এটা সামষ্টিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবর্তে সরকারকে এখন মাঝারি ও বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রের দিকে মনোযোগী হতে হবে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করার জন্য আগে কয়লানীতি চূড়ান্ত করতে হবে।
জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চিন্তাটি খারাপ ছিল না মন্তব্য করে দেবপ্রিয় বলেন, এর অভিঘাতগুলোর সামগ্রিক মূল্যায়ন হয়নি। এটি এখন গলার ফাঁস হয়ে গেছে। ভালো ফলের সম্ভাবনা ছিল কিন্তু প্রশাসনিক, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ব্যর্থতার অভাবে তা হলো না।
গুরুত্বপূর্ণ সব সড়ক চার লেনে উন্নীত করা এবং বছরব্যাপী নিয়মিত সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছে সিপিডি। পাশাপাশি রেলের ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাবকেও সমর্থন করা হয়েছে। তবে ফাহমিদা খাতুন বলেন, এটি হতে হবে ধাপে ধাপে।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিষয়ে সিপিডি বলেছে, একই সঙ্গে বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে একই ব্যক্তি একাধিক কর্মসূচির সুবিধা ভোগ করছে। তাই সুবিধাভোগীদের জন্য একটি তথ্যভান্ডার তৈরি এবং জেলা পর্যায়ে কত দরিদ্র আছে, সে বিষয়েও সমীক্ষা হওয়া প্রয়োজন। অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থানের মজুরি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে তা বাজারদরের চেয়ে বেশি করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শেয়ারবাজারে প্রত্যেক বেনিফিশিয়ারি ওনার (বিও) হিসাবধারীর জন্য করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকা বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দিয়ে সিপিডি বলেছে, এটি লেনদেনে স্বচ্ছতা আনবে এবং রাজস্ব আদায়ে ভূমিকা রাখবে।
পাঁচটি বার্তা: যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও জাপানের তিন শীর্ষপর্যায়ের মন্ত্রীর সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফর থেকে পাঁচটি বার্তা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বার্তাগুলো হচ্ছে: অবকাঠামো ঠিক না হলে বিনিয়োগ বাড়বে না, দুর্নীতি দূরীকরণে সচেষ্ট হতে হবে, মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখতে হবে, সংঘাতের পথ পরিহার করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।