(২০৫১) ঝুঁকি সত্ত্বেও বাড়ছে বিনিয়োগ নিবন্ধন

Thursday, September 22, 2011 Unknown

  দেশে অবকাঠামো সমস্যাসহ নানা ঝুঁকি সত্ত্বেও বাড়ছে বিনিয়োগ নিবন্ধন। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের স্ট্রেস টেস্টিং রিপোর্টে দেশের চারটি খাতকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে আখ্যায়িত করে। তার পরও প্রতি বছরই বাড়ছে দেশী বিনিয়োগ। বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের বিনিয়োগ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের তুলনায় বিনিয়োগ নিবন্ধন বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের মাসিক বিবরণী অনুযায়ী চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বিনিয়োগ নিবন্ধনের পরিমাণ ৩ লাখ ৪০ হাজার ৮৮৭ দশমিক ৬৭৭ টাকা। বিনিয়োগকৃত প্রকল্পের সংখ্যা ১ হাজার ৫৭টি। ২০১০ সালে মোট বিনিয়োগ নিবন্ধনের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৭১৭ দশমিক ৬৭৯ টাকা এবং প্রকল্পের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৬০০টি। বিনিয়োগ নিবন্ধন হয়েছে দেশের ১০টি শিল্প খাত ঘিরে। এগুলো হলো— কৃষিভিত্তিক শিল্প, ফুড অ্যান্ড অ্যালাইড, টেক্সটাইল, প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিশিং, ট্যানারি অ্যান্ড লেদার, কেমিক্যালস, গ্লাস অ্যান্ড সিরামিক, ইঞ্জিনিয়ারিং, সেবা এবং বিবিধ শিল্প।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বণিক বার্তাকে বলেন, ২০০৯-১০ অর্থবছরের তুলনায় ২০১০-১১ সালে দেশীয় বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি খুবই উত্সাহব্যঞ্জক। তবে নিবন্ধিত বিনিয়োগের পরিমাণ দিয়ে সার্বিক বিনিয়োগ পরিস্থিতি যাচাই করা ঠিক হবে না। বাংলাদেশে অবকাঠামোগত যেসব সমস্যা রয়েছে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এতসব সমস্যার মধ্যেও দেশীয় উদ্যোক্তাদের ভূমিকা প্রশংসনীয়। তবে এসব বিনিয়োগ যত বহুমুখী হবে, ততই ভালো। কারণ বহুমুখী রফতানি দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
এ বিষয়ে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সব ধরনের ঝুঁকির মুখোমুখি হতে হয়। এটা ব্যবসার একটা অংশ। এসব ঝুঁকি মোকাবেলা করে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমেই উদ্যোক্তাদের সফলতা আসে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে নিবন্ধিত দেশীয় বিনিয়োগের পরিমাণ অবশ্যই ইতিবাচক। তবে যথাযথ সরকারি সহযোগিতা না পেলে উদ্যোক্তাদের এ উদ্যোগ বাধাপ্রাপ্ত হবে। সরকারের উচিত হবে ব্যবসার পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি এসব বিনিয়োগ যেন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়, তা সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা।
বিনিয়োগ বোর্ডের পরিচালক (দেশীয় বিনিয়োগ) তৌহিদুর রহমান খান বলেন, ‘নিবন্ধিত বিনিয়োগ প্রস্তাবের পরিমাণ বাড়ার অর্থ হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ পাচ্ছেন। তবে এ নিবন্ধনগুলো বাস্তবায়নেও ব্যবসায়ীদের আরও উদ্যোগী হতে হবে। পর্যাপ্ত লোকবলের অভাবে আমরা এই বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া পুরোপুরি নজরদারি করতে পারি না।’ তবে আগামী বছরগুলোতে বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণের চিত্র অনেকখানি বদলে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
বিনিয়োগ বোর্ডের সূত্র অনুযায়ী, এ বছর সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হয়েছে সেবা খাতে। এই খাতের ১০৪টি প্রকল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ ১ লাখ ১১ হাজার ৮১৫ দশমিক ৩১১ মিলিয়ন টাকা। এরপর আছে টেক্সটাইল। এই শিল্পের ৪২৮টি প্রকল্পে বিনিয়োগের পরিমাণ ৮৪ হাজার ৬৩৩ দশমিক ৮৮৬ মিলিয়ন টাকা। এ ছাড়া কৃষিভিত্তিক শিল্পের ১০৮টি প্রকল্পে ৪৯ হাজার ৮৩৫ মিলিয়ন, কেমিক্যালস শিল্পের ১৫৪টি প্রকল্পে ৪৫ হাজার ২৯৮ মিলিয়ন, ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের ১৫১টি প্রকল্পে ৩২ হাজার ৬০৫ মিলিয়ন, ফুড অ্যান্ড অ্যালাইড শিল্পের ৬১ প্রকল্পে ১০ হাজার ৭৭৬ মিলিয়ন টাকা বিনিয়োগ হয়েছে।

Blog Archive