(৫০৫) অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে কথা বলে

Wednesday, April 27, 2011 Unknown
পুঁজিবাজারের উত্থান-পতন ও তারল্য-সংকট: গত বছরের জুন মাসে ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক ৬০০০ পয়েন্ট ছাড়ায়। পরে সূচক ক্রমশ বাড়তে থাকার পর ডিসেম্বরে গিয়ে ঠেকে প্রায় ৯০০০-এ। তার পরই পতন হয় বাজারে।
এই সময়েই ব্যাংকগুলোতে নগদ অর্থের ঘাটতি দেখা দিতে থাকে। নভেম্বর থেকে তা আরও দ্রুত হয়। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে তা তীব্র হয়। ব্যাংকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আরও কয়েকটি কারণের সঙ্গে এ সময় শেয়ারবাজার থেকে মুনাফা তুলে অথবা শেয়ার বিক্রি করে মানুষ টাকা নিজের হাতে রাখতেই বেশি স্বস্তিকর মনে করেছেন। হয়তো ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার ঘাটতি দেখা দেওয়ায় মানুষের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েও থাকতে পারে। আবার শেয়ারে বড় মুনাফা যাঁরা তুলেছেন, তাঁরা হয়তো নানা কারণে ব্যাংক-ব্যবস্থায় টাকা রাখতে চাননি, অর্থ গোপন করেছেন।
মূল্যস্ফীতির চাপ: গত জুলাই মাস থেকেই দেশে মূল্যস্ফীতির গতি ঊর্ধ্বমুখী। এ সময় সাড়ে ৭ শতাংশের কাছাকাছি ছিল সাধারণ ভোক্তা মূল্যসূচক। জানুয়ারিতে ৯ শতাংশের ওপরে উঠে যায়।
দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষকে বেশি ব্যয় করতে হয়েছে। ফলে তাদের হাতে আগের বছরের চেয়ে অন্তত ১০ শতাংশ বেশি অর্থ রাখতে হয়েছে। কিন্তু এই অর্থের একটা অংশও ব্যাংকে ঢুকেছে।
অন্যদিকে গত ২০০৯-১০ অর্থবছরের জানুয়ারি থেকে জুন সময়ে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে দেশে মূল্যস্ফীতির হার ৯ শতাংশের কাছাকাছি ছিল। এমনকি ফেব্রুয়ারিতে তা ৯ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু সে সময়ও মানুষের হাতে টাকা এতটা বাড়েনি।
আমদানি বাড়ার প্রভাব: ব্যাংকে নগদ অর্থসংকটের আরেকটি বড় কারণ আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি। এর হার প্রায় ৪৩ শতাংশ। আমদানি ব্যয় বাড়ায় প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার জোগান দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কয়েক মাস ধরে বাজারে ডলার বিক্রি করে আসছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এ সময়ে তারা প্রায় ৯০ কোটি ডলার বাজারে দিয়েছে। এর বিপরীতে (প্রতি ডলার ৭১ টাকা ধরে) প্রায় ছয় হাজার ৪০০ কোটি টাকা বাজার থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গিয়ে ঢুকেছে। এ টাকা আর মুদ্রাবাজারে আসছে না, যতক্ষণ না বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ এক বছর আগেও উল্টো বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার থেকে ডলার কিনেছে।
বর্তমান পরিস্থিতি: তারল্য-পরিস্থিতির অবশ্য এখন কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে সামগ্রিক ব্যাংক-ব্যবস্থায় ২৪ হাজার কোটি টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে। আবার বাংলাদেশ ব্যাংকে তফসিলি ব্যাংকগুলোর সংরক্ষিত উদ্বৃত্ত আমানত ১৩ হাজার ৪০৯ কোটি টাকাই প্রকৃত অর্থে অলস অর্থ। অন্যদিকে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারেও কয়েক দিন ধরে তিন হাজার ২৫০ কোটি টাকা (কলমানি) লেনদেন হচ্ছে।

Blog Archive