(৩৬২) সিএমসি কামাল

Tuesday, April 12, 2011 Unknown
২০০৯ সালের প্রথম কোয়ার্টারে (জানুয়ারি থেকে মার্চ) ৪০ লাখেরও বেশি টাকা লোকসানে ছিল বিসিবি সভাপতি অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোস্তাফা কামালের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান সিএমসি কামাল টেঙ্টাইল ওই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রতি শেয়ারের আয় (ইপিএস) ছিল ঋণাত্মক ( দশমিক ৬১ টাকা)
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ ২০০৯ সালের জন্য ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দেওয়ার সুপারিশ করে ২০১০ সালের প্রথম দিকেই প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের বাজারমূল্য অভিহিত মূল্য অতিক্রম করে ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে শেয়ারের বাজার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় এক হাজার ৬০০ টাকা
২০০৯ সালে লোকসানে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের বাজার মূল্য কিভাবে পরের বছরে অভিহিত মূল্যের প্রায় ১৬ গুণ হয়, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে শেয়ারবাজার বিপর্যয় তদন্তে গঠিত কমিটি তদন্ত কমিটি শেয়ারটির অতিমূল্যায়নের পেছনের ক্রিড়নক হিসেবে বেশ কিছু ঘটনা চিহ্নিত করেছে
২০০৯ সালের জন্য ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দেওয়ার প্রস্তাব শেয়ারের দাম বাড়াতে সহায়ক হয়েছে বলে ধারণা করেছে তদন্ত কমিটি ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দেওয়ার ফলে ২০১০-এর আগস্টে প্রতিষ্ঠানটির মর্যাদা 'জেড' থেকে '' ক্যাটাগরিতে উন্নীত হয় একই সঙ্গে ২০১০ সালের প্রথম কোয়ার্টারে (জানুয়ারি থেকে মার্চ) কর পরবর্তী নিট মুনাফা ৭০ লাখ টাকা ঘোষণা করাও কারসাজিতে ভূমিকা রেখেছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ২০১০ সালের জুলাই নাগাদ প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ এর শেয়ারের অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা থেকে ১০ টাকায় নামিয়ে আনে
২০১০-এর সেপ্টেম্বরে সিএমসি কামাল টেঙ্টাইলস মিলস পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধির জন্য প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে দুটি রাইট শেয়ার দেওয়ার প্রস্তাব করে একই সঙ্গে প্রতিটি রাইট শেয়ারের মূল্য সাড়ে সাত টাকা প্রিমিয়ামসহ সাড়ে ১৭ টাকায় বিক্রির প্রস্তাব করে ছাড়া অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি থেকে ২০০ কোটি টাকা করারও প্রস্তাব দেয় প্রতিষ্ঠানটি
এদিকে ২০১০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠানটি নিজস্ব জমি কারখানা ভবনের পুনর্মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নেয় ওই বছরের ১০ অক্টোবর পুনর্মূল্যায়নের কার্যক্রম শেষ করার তারিখ নির্ধারণ করা হয় পুনর্মূল্যায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় মেসার্স কমডিটি ইনস্পেকশন সার্ভিসকে পুনর্মূল্যায়নের পরে এক কোটি ৫৫ লাখ টাকার জমির দাম দাঁড়ায় ৩৩ কোটি টাকা আর ছয় কোটি ১৩ লাখ টাকার কারখানা ভবনের দাম বেড়ে হয় ২০ কোটি টাকা ২০১০-এর সেপ্টেম্বরে সিএমসি কামাল টেঙ্টাইলস মিলস প্রায় তিন কোটি ১০ লাখ টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা ঘোষণা করে
এভাবে বাজারে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের মূল্য অত্যধিক বেড়ে যায় সময় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকরা প্রচুর শেয়ার বাজারে বিক্রি করে ব্যক্তিগত লাভ অর্জন করে
সিএমসি কামাল টেঙ্টাইলস মিলসের পাঁচ পরিচালক অতিমূল্যায়িত শেয়ারের ব্যবসা করে প্রচুর ব্যক্তিগত মুনাফা অর্জন করেছে বলে তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১০ সালের জানুয়ারি বিসিবি সভাপতি অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোস্তাফা কামালের শেয়ার ছিল দুই লাখ ৩৫ হাজার ৫০০টি ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড পরবর্তী অর্থাৎ ওই বছরের ২৪ জুনের পর মোস্তফা কামালের শেয়ারের সংখ্যা দাঁড়ায় দুই লাখ ৫৯ হাজার ৫০টি ওই বছরের ২১ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবরের মধ্যে অর্থাৎ সাত দিনে তিনি ২৩ হাজার ৫০০টি শেয়ার বিক্রি করে যার বাজারমূল্য ছিল তিন কোটি পাঁচ লাখ টাকা বছরের শুরুতে প্রতিষ্ঠানটির আরেক পরিচালক গোলাম সারওয়ার শেয়ার ছিল ৫২ হাজার ৯৩৫টি ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড পরবর্তী সময়ে তাঁর শেয়ারের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৮ হাজার ২২৯টি ২০১০ সালের অক্টোবর এক দিনের মধ্যে গোলাম সারওয়ার পাঁচ হাজার ২৫০টি শেয়ার বিক্রি করেন ওই শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৫৯ লাখ আট হাজার টাকা কাশফি কামালের বছর শুরু হয়েছিল ৪৬ হাজার ৭০০টি শেয়ার দিয়ে ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড পরবর্তী সময়ে তাঁর শেয়ারের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫১ হাজার ৩৭০টিতে ২০১০ সালের অক্টোবরের ২৮ থেকে ৩১ তারিখের মধ্যে তিনি সাত হাজার ১০০টি শেয়ার বিক্রি করেন যার বাজারমূল্য ছিল ৯৯ লাখ পাঁচ হাজার টাকা


Blog Archive