মোবাইল থেকে নিস্তারের ৭ টি পথ - 7 ways to get rid of Mobile Phone

Friday, October 11, 2013 Other

অনেকের কাছে জীবনের স্বাভাবিক সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে গেছে মুঠোফোন। নানা কাজে প্রতিদিন অসংখ্যবার চোখ রাখতে হয় মুঠোফোনের পর্দায় বা পরীক্ষা করে দেখতে হয় কেউ কল করেছে কি না। মানুষের সঙ্গে বারবার যন্ত্রের এই ক্ষণিকের সাক্ষােক গবেষকেরা বলেন, ‘মাইক্রো-ইন্টারঅ্যাকশন’। অভ্যাসবশত গড়ে ওঠা মাইক্রো-ইন্টারঅ্যাকশন মানুষের জীবনে যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠতে পারে। অতিরিক্ত মুঠোফোনের ব্যবহারে মানসিক ও শারীরিক ক্ষতি হতে পারে বলে গবেষকেরা সতর্ক করেছেন। সম্প্রতি ব্রিটিশ লেখক টম চ্যাটফিল্ডের লেখা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি অনলাইন। ওই প্রতিবেদনে লেখক জানিয়েছেন, তিনি মুঠোফোন ব্যবহারের আচরণবিধি-সংক্রান্ত একটি প্রকল্পে কাজ করছেন। এই প্রকল্পে আচরণবিধির ক্ষেত্রে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। টম চ্যাটফিল্ড জানিয়েছেন, স্বাভাবিক সুন্দর জীবন-যাপনে মুঠোফোনের যন্ত্রণা থেকে দূরে থাকতে সাতটি উপায় মানুষের জন্য কাজে লাগতে পারে। বার্তা নয়, কথা বলুন কারও সঙ্গে জরুরি দরকার হলে ফোন করে দ্রুত কথা সেরে ফেলুন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বার্তা পাঠিয়ে, চ্যাট করার চেয়ে মুঠোফোনে কথা বলে প্রয়োজন মিটিয়ে ফেলা ভালো। অনলাইনে থাকার সুবিধা নিয়ে এখন অনেককিছু করা যায় বলে আমরা অবসর, বিনোদন, খাবার, ঘুমের বিষয়গুলোর পার্থক্য করতে পারি না। আমরা এখন মুঠোফোন সঙ্গে থাকায় অনেক সময় সামনের মানুষটাকেও দেখতে পারি না; মানুষের চোখের দিকে তাকানোর সময় পাই না। ডিজিটাল যোগাযোগ করতে গিয়ে পারস্পরিক যোগাযোগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একদিন হোক মুঠোফোনমুক্ত জীবনযাপন আমাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অর্জন করা প্রয়োজন। প্রতিটি যন্ত্রের একটি অফ বাটন থাকে। ‘ফেয়ার অব মিসিং আউট’ বা ফোমো নামের মুঠোফোন থেকে বিচ্ছিন্নতার ভয় থাকায় অনেকেই অফ বাটন ব্যবহার করেন না। আবার অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, একবার কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলেও পরে অভ্যাসবশত সে সিদ্ধান্তটি আর কার্যকর করা হয় না। কিন্তু নিয়ম ভেঙে মাঝেমধ্যে মুঠোফোন বা যন্ত্রবিহীন জীবনযাপনের অভ্যাস মানসিকভাবে প্রফুল্লতা এনে দিতে পারে। মাল্টিটাস্কিং এড়িয়ে চলুনমুঠোফোন ব্যবহার থেকে স্বস্তির জীবন মুঠোফোনের প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশনের ব্যবহার করুন। কোন কাজ কোন সময় করা উচিত, তার একটি নোট তৈরি করে নিতে পারেন এবং নিজের নির্দেশনা মেনে মুঠোফোন ব্যবহার করুন। মুঠোফোনের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করুন। খাবার সময় মুঠোফোন নয় খাবার টেবিলে বসে মুঠোফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন অনেকেই। খাবার টেবিলে বা মুখোমুখি বসে কথা বলার সময় টেবিলে কনুই রেখে মুঠোফোন ব্যবহারকে অনেকেই ভালো আচরণ বলে মনে করেন না। এতে মানুষের মধ্যে যোগাযোগ কমে যায় এবং দূরত্ব বাড়ে। মুঠোফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আলোচনার গুরুত্ব কমে যেতে পারে। ছবি তোলার আগে নিজে উপভোগ করুন কোথাও বেড়াতে গেলে বা কোনো উত্সব উপভোগ করার আগেই অনেকে ছবি তুলতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ঘটনার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিন এবং স্মার্টফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ার পরিবর্তে নিজেকে আবিষ্কার করুন। ছবি তোলার আগে চারপাশটা ভালো করে দেখুন। হয়তো ছবি তোলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে থাকার কারণে গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় আপনার সামনে ঘটে গেল কিন্তু তা উপভোগ করতে পারলেন না। স্মৃতি হিসেবে ছবি তুলে রাখতে পারেন, তবে তা যেন পুরো আনন্দ মাটি করে না দেয় বা আপনাকে ঘটনা থেকে বিচ্ছিন্ন করে না দিতে পারে, সে বিষয়টি খেয়াল রাখবেন। ছবি আপলোড করার আগে যাচাই করুন অনেক সময় সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে আমরা অসংখ্য ছবি আপলোড করি। কিন্তু সব ছবি কী গুরুত্বপূর্ণ? ছবি আপলোডের সময় অবশ্যই ছবির মান ও গুরুত্ব বুঝে আপলোড করা উচিত। সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটে অতিরিক্ত ছবি আপলোডের কারণে বন্ধুরা বিরক্ত হতে পারে বা ছবি দেখা বন্ধ করে দিতে পারে। নির্বাচিত ও গুরুত্বপূর্ণ ছবি আপলোড করার বিষয়টি খেয়াল রাখা উচিত। মুঠোফোনকে জানান শুভরাত্রি অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায় রাতে ঘুমানোর সময় বালিশের পাশে মুঠোফোন রেখে দেন। বিরক্তিহীনভাবে ঘুমাতে চাইলে মুঠোফোন বন্ধ করে হাতের কাছ থেকে সরিয়ে রাখাই শ্রেয়। তা না হলে যেকোনো সময় মুঠোফোনে কল এসে বিরক্তি তৈরি করতে পারে। মুঠোফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার দেহঘড়ির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। রাতে ঘুমানোর সময় মুঠোফোন বন্ধ রাখার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। লেখক টম চ্যাটফিল্ডের মতে, আচরণবিধি মানলেই সব সমস্যার সমাধান হয় না—এ কথা যেমন ঠিক, তেমনি আমাদের কিছু অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে পারলে বেশ কিছু স্মরণীয় মুহূর্ত আমরা উপভোগ করতে পারি। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্যের টিম হারফোর্ড নামের একজন লেখক বলেন, মুঠোফোন মানুষের অভ্যাস তৈরি করে। তাই আপনি মুঠোফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোন কোন অভ্যাস গড়ে তুলবেন, তা নিয়ে ভাবতে পারেন।

Blog Archive