নারীরা তার প্রিয় মানুষটির কাছে কতো কিছুই না চায়। পুরুষরা বলেন, নারীর চাওয়ার নাকি শেষ নেই। কিন্তু বহু মনো-পরীক্ষা আর গবেষণার পর এ রহস্যভেদের চেষ্টা চালিয়েছেন অভিজ্ঞরা। তারা বলছেন, সব নারীর মোটামুটি ১০টি মৌলিক চাওয়া আছে যা একজন পুরুষের কাছে তারা আশা করে থাকে। এ ১০টি বিষয় জেনে রাখলে আপনি প্রেমিকা বা অর্ধাঙ্গিনীকে অনেক সুখী করতে পারেন। বহু নারী নিজেরাই এ কথাগুলো বলেছেন। তাদের ভাষাতেই তুলে দেয়া হল।
১. ছেলেটা আমাকে শুধুই দেখতে চায়- এ আকাঙ্খা সব নারীরই থাকে তার পুরুষ সঙ্গীর কাছে। অবসরে মোবাইলে মিষ্টি মেসেজ, ফুল, চকোলেট, কার্ড, ঘুরতে যাওয়া ইত্যাদি কাজে ছেলেরা যেনো কখনোই ক্ষান্ত না দেয়। আমরা মনেপ্রাণে চাই যে আমার প্রেমিক যেনো এসব কাজ সবসময় করে।
২. আমরা নিরাপদ বোধ করতে চাই। একটা ছেলের সাথে সময় কাটানোর সময় যেনো মনে হয় পরিবারেরই কারো সাথে আছি। তাকে আমি চিনি-জানি। কাজেই ছেলেদর উচিত আমাদের কাছে নিজেকে স্পষ্ট করে তোলা।
৩. তুমি আমার সবকিছু, আমার প্রিয়তমা- এমনভাবেই যেনো ছেলেরা আমাদেরকে দেখে। মেয়ে হয়ে আমরা তোমাদের সমান নই, তা মানতে রাজি নই। আমাদের সব কাজেই তোমাকে এগিয়ে আসতে হবে তা কিন্তু নয়। আবার তাই বলে ছেলেদের ভদ্রতা বা সৌজন্যবোধ সম্পর্কে আমরা যথেষ্ট সজাগ। মেয়েরা আসলে পুরুষের কাছে নিজেদেরকে খুব ঐশ্বর্যমন্ডিত, আদুরে এবং সৌন্দর্য্যের উপমা হিসেবে দেখতে চায়।
৪. আমরা কথা বলতে পছন্দ করি। আর এসব কথা আমার প্রেমিক বা হাজবেন্ড মনযোগ দিয়ে শুনলে আমাদের আর কিছুই চাই না। সব কথাই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা নয়। অযথা বকবক হলেও আমাদের কথা বলতে ভাল লাগে। ছেলেরা শুধু শুনলেই চলবে।
৫. আমরা আশা করি ছেলেরা যেনো সম্পর্কের নানা ঘটনা বা বিশেষ সময়টি মনে রাখে। কারণ সে যা পছন্দ করে তা নিশ্চয় মনে রাখে। ক্রিকেট খেলা কোন দিন বা অমুকের সঙ্গে মিটিং কবে এসব মনে রাখতে পারলে আমাদের প্রথম প্রপোজের দিন বা মেয়েদের জন্মদিন কেনো মনে রাখতে পারবে না।
৬. আমরা সাজগোজ করতে ভীষণ ভালবাসি। কাজেই যেকোনো সময় আমাদের রূপচর্চা বা সাজসজ্জার ব্যাপারে উদার হতে হবে। আর এ কারণে অন্যরা আমাদের দিকে একটু বেশি তাকালে দুশ্চিন্তায় পড়ে যাওয়ার কিছু নেই। কারণ আমি সারাক্ষণ তোমার বুকেই আছি।
৭. ছেলেরা যা কথা দেয় সেগুলো রাখলে মেয়েরা বেজায় খুশি হয়। মেয়েরা হালকা সৌজন্যবোধ পছন্দ করে। ছেলেদের সময়ানুবর্তীতা আমাদের কাম্য। আর যদি কিছু পরিবর্তন ঘটতে থাকে তাদের মনে, তবে তা খোলাসা করে বলে দেয়াই ভাল।
৮. মেয়েদের মন থেকে ভালবাসতে হবে। ঠিক যেমন ছেলেরা মেয়েদের মোহনীয় সৌন্দর্য্যে পাগল, আমরাও তেমনি স্বপ্নীল প্রেমালাপ আর খাঁটি ভালবাসা পেতেই অপেক্ষা করি।
৯. আমরা খেলা ও খেলতে পছন্দ করতে পারি। তবে তা যে ছেলেটির পছন্দের হতে হবে তা কিন্তু নয়।
১০. এটা ছেলেরা হয়ত বিশ্বাস করতে চাইবে না; কিন্তু একেবারে সত্যি। আমরা সবসময় ছেলেদেরকে তাদের আড্ডা থেকে দূরে রাখতে চাই না। আমরা বুঝি যে এসবের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ আমাদেরও বান্ধবীদের সাথে আড্ডা দিতে অনেক ভাল লাগে।
খুব সহজ সরল বিষয়। এই ব্যাপারগুলো একটু খেয়াল করে পালন করলেই একটি ছেলে তার প্রিয়তমার অনেক চাওয়া-পাওয়া পূরণ করতে পারে। মেয়েরা নিজেরাই তা আপনাদের শিখিয়ে দিয়েছেন অবলীলায়। ইন্টারনেট থেকে সাকিব সিকান্দার
যোগ্য সঙ্গী বাছাই করতে চুমো আমাদের দারুণভাবে সহযোগিতা করতে পারে। এমনকি সম্পর্কের ইতিহাসে একবার চুমোর অভিজ্ঞতা থেকে কেউ চিরতরে সরেও আসতে পারে।
‘পৃথিবীর সব সমাজ ও সংস্কৃতিতেই মানুষের যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে নানা রূপে আবশ্যকীয় উপাদান হিসেবে চুমোর উপিস্থতি রয়েছে’- বলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষামূলক মনোবিজ্ঞান বিভাগের রাফায়েল ওলোডারস্কি।
ওলোডারস্কি ও তার সহকর্মীরা মিলে একটি অনলাইন জরিপের আয়োজন করেছিলেন। তাতে ৯০০ জন প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারীকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্কের ক্ষেত্রে চুমোর ভূমিকা কী?
ওলোডারস্কি বলেন, যৌনসম্পর্কের ক্ষেত্রে চুমোর ভূমিকা নিয়ে তিনটি প্রচলিত থিওরি আছে- ১. এটি সম্ভাব্য সঙ্গীর জেনেটিক গুনাবলী সম্পর্কে জানতে সহয়তা করে। ২. এটি উত্তেজিত করতে সাহায্য করে। ৩. এটা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে সহযোগিতা করে। আমরা দেখতে চেয়েছিলাম, নিবিড় পর্যবেক্ষণে এই তিন থিওরির উপস্থিতি বোঝা যায় কি না।
জরিপে দেখা যাচ্ছে, সম্পর্কের ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষদের চেয়ে চুমোর ভূমিকাকে অনেক গুরুত্ব দিয়ে দেখে।
শুধু তাই নয়, নারী ও পুরুষদের মধ্যে যারা নিজেদের আকর্ষণীয় বলে ভাবেন অথবা যারা স্বল্পমেয়াদী ও হঠাৎ সম্পর্কের ব্যাপারে উৎসাহী তারা চুমোকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে ভাবেন। এরা সঙ্গী বাছাই করার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সিলেকটিভ।
আগে একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, মেয়েরা সঙ্গী বাছাই করার ক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়ে বেশি সতর্ক।
গবেষকরা বলছেন, জরিপে যে উত্তরদাতারা চুমোকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলছেন তাদের মতে চুমোর মাধ্যমে ভাল সঙ্গী বাছাই করা সম্ভব।
চুমোর সময় অবচেতন মনে সঙ্গীরা স্বাদ, গন্ধ, জৈবিক নানা উপাদান, জিনগত অবস্থা ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা পায়। প্রফেসর রবিন ডানবারের মতে, সঙ্গী নির্বাচন ও পূর্বরাগের সিদ্ধান্ত মানুষ ভীষণ জটিল প্রক্রিয়ার নেয়। রবিন বলেন, ‘প্রাথমিক আকর্ষণ হয়তো চেহারা, শরীর বা সামাজিক কারণে তৈরি হতে পারে। কিন্তু চূড়ান্ত মূল্যায়ন তৈরি হয় সম্পর্কের গভীর স্তরে গিয়ে। যখন পূর্বরাগ ও চুমোর পর্যায়ে নারী-পুরুষ উপস্থিত হয় তখন আসল সিদ্ধান্তটা গৃহীত হয়।’
সম্প্রতিক এই গবেষণার মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, চুমোর পরেই আসলে লোকে সিদ্ধান্ত নেয় সম্পর্কটা স্বল্পমেয়াদী না দীর্ঘমেয়াদী হবে।
বিশেষ করে মেয়েরা দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্কের ক্ষেত্রে একে ভীষণ গুরুত্ব দিয়ে দেখে। তাদের মতে, দীর্ঘসময়ের জন্য জোড়বদ্ধ যুগলের ক্ষেত্রে সম্পর্ককে মধুর ও মজবুত করার ক্ষেত্রে চুমোর ভূমিকা অনেক বড়।
মেয়েরা কিছু মিথ্যা বলে স্রেফ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে অথবা পরিস্থিতি সামাল দিতে। অনেক সময় সংঘাত বা তর্ক এড়াতেও তারা এ কাজটি করে। মেয়েরা যে মিথ্যাগুলো বলে সেগুলোর মধ্যে বিখ্যাত ১৩টি জেনে নিন:
১. আমি তো তোমার ফোনের অপেক্ষায় ছিলাম না।
২. আমি তোমাকে পছন্দ করি কিন্তু কখন আমার মধ্যে ভালোবাসা তৈরি হবে জানি না।
৩. এখনই যদি আমি রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেই, তবে তোমাকেই বেছে নেব।
৪. আমার মনে আমাদের বিলটা শেয়ার করা উচিত। সবসময় তুমি দেবে কেন?
৫. আমি কখনোই বুঝতে পারিনি- এটা আমার এত ভাল লাগবে।
৬. যৌনতা মজার বিষয়।
৭. হোক ছেলেটা টাকমাথার এবং দেখতে খারাপ। কিন্তু টাকা তো আছে। একটা নিশ্চিত জীবন পাওয়া যাবে।
৮. আমি সবকিছু আঁকড়ে ধরে থাকতে চাই না। ঘ্যানঘ্যানও করতে চাই না।
৯. আমি শুধু তোমাকেই চেয়েছিলাম।
১০. আমি যদি তার সঙ্গে না থাকি, তবে সে আরেকজনকে ঠিকই খুঁজে নেবে।
১১. তোমার কোনো ভুল নেই, আমারই কোথাও ভুল হয়েছে।
১২. তোমার বাড়ির লোকদের সঙ্গে আমি ভালই আছি। হাজার হোক তারা তো আমারই পরিবার।
১৩. তুমি যদি বন্ধু হতে চাও- আমার আপত্তি নেই। আমিও তাই ভাবছিলাম। কেন শুধু শুধু জটিলতা ডেকে আনা?
মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা পৃথক্করণ (ডিমিউচুয়ালাইজেশন) কর্মসূচির আওতায় স্টক এক্সচেঞ্জের প্রথম পরিচালনা পর্ষদ গঠন নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। দুই স্টক এক্সচেঞ্জই বর্তমান পর্ষদকে প্রথম পরিচালনা পর্ষদ হিসেবে গ্রহণে আগ্রহী।
স্টক এক্সচেঞ্জের বিশেষ সাধারণ সভার (ইজিএম) জন্য সাধারণ সদস্যদের মধ্যে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে তাতে বর্তমান পর্ষদকে প্রথম পর্ষদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ডিএসইর সংঘ স্মারকে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ডিএসই বলছে, ডিমিউচুয়ালাইজেশন আইনের ধারা অনুযায়ী প্রথম পর্ষদ হিসেবে বর্তমান পর্ষদকে বহাল রাখার প্রস্তাব নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল। সেটিকে প্রথম পর্ষদ হিসেবে ইজিএমে গ্রহণ করা হবে। এদিকে সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ডিমিউচুয়ালাইজেশনের যে কর্মসূচি অনুমোদন করেছে তাতে বর্তমান পর্ষদকে প্রথম পর্ষদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি।
এই অবস্থায় বর্তমান পর্ষদকে প্রথম পরিচালনা পর্ষদ হিসেবে উল্লেখ করে গত মঙ্গলবার স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যদের মধ্যে ইজিএমের চিঠি বণ্টন করা হয়। তাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়। দুই স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদ্বয়কে (সিইও) মৌখিকভাবে এই আপত্তির কথা জানিয়েছে বিএসইসি। সেসঙ্গে সদস্যদের মধ্যে বণ্টন করা তালিকার সঙ্গে শর্ত যুক্ত করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টক এক্সচেঞ্জের একজন সিইও মৌখিক এই নির্দেশনার পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এই পর্ষদ তালিকাটি বণ্টন করা হয়েছে। তাই বিএসইসির আপত্তি ও সংশোধনীর বিষয়টিও পর্ষদকে জানানো হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক হেলালউদ্দিন নিজামী প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে প্রথম পরিচালনা পর্ষদের যে তালিকা প্রস্তাব করা হয়েছিল সেটি কমিশন অনুমোদন করেনি। এ ক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জগুলোকে আইন অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। আইন অনুসরণ করতে গিয়ে যদি কোনো ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হয়, কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যাখ্যা বা পরামর্শ দেবে। কিন্তু কমিশনের ব্যাখ্যা বা পরামর্শ ছাড়া স্টক এক্সচেঞ্জের ইজিএমের আলোচ্যসূচিতে বর্তমান পর্ষদের তালিকা অন্তর্ভুক্ত করাটা অনভিপ্রেত।’
হেলালউদ্দিন আরও বলেন, কমিশন এরই মধ্যে স্বপ্রণোদিত হয়ে আইনের অস্পষ্টতা দূরীকরণে মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছে। এ অবস্থায় ইজিএমের আলোচ্যসূচিতে বর্তমান পর্ষদকে প্রথম পরিচালনা পর্ষদ হিসেবে অন্তর্ভুক্তির আগে কমিশনের মতামতের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি যুক্ত করার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জের সিইওদের মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে আজ বৃহস্পতিবার সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় শেষ হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারের লেনদেন। গতকাল বুধবারের ধারাবাহিকতায় আজও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। ফলে সূচক বেড়েছে, তবে লেনদেন কমেছে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে।
প্রধান বাজার ডিএসই সূত্রে জানা যায়, ডিএসইতে আজ লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১৯ কোটি টাকা, যা গতকালের চেয়ে ছয় কোটি টাকা কম। গতকাল এই বাজারে ২২৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।
অন্যদিকে আজ চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ১৮ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা গতকালের চেয়ে সাত কোটি টাকা কম। গতকাল এই বাজারে ২৫ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়।
লেনদেন কমলেও দুই বাজারেই আজ সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ করা যায়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর ডিএসইএক্স সূচক ২২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৮৪৩ পয়েন্টে।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয়। সূচকের ঊর্ধ্বমুখী এই প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
ডিএসইতে আজ ২৮৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে। এর মধ্যে ১৪৭টির দাম বেড়েছে; কমেছে ১১২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।
ডিএসইর পাশাপাশি সিএসইতেও সূচক বেড়েছে। লেনদেন শেষে সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক ৪৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১১ হাজার ৮৬৭ পয়েন্টে।
আজ সিএসইতে হাতবদল হওয়া ২০৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮০টির দাম বেড়েছে, কমেছে ৯৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।
এদিকে ডিএসইতে আজ লেনদেনে শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ আরগন ডেনিমস লিমিটেড। আজ এই প্রতিষ্ঠানের ১২ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এ ছাড়া লেনদেনে শীর্ষে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে এনভয় টেক্সটাইল, এমআই সিমেন্ট, স্কয়ার ফার্মা, হেইডেলবার্গ সিমেন্ট, সিএমসি কামাল, জেএমআই সিমেন্ট, বিএসসিসিএল, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যাল, অ্যাকটিভ ফাইন প্রভৃতি।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল অপারেটর বাংলালিংক বাণিজ্যিকভাবে তাদের থ্রিজির যাত্রা শুরু করেছে।
প্রাথমিকভাবে এই সেবা ঢাকার গুলশান, বনানী, ওল্ড ডিওএইচএস, বারিধারা ও মতিঝিল এবং চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে কার্যকর হবে। গ্রাহকরা তাদের থ্রিজি উপযোগী ডিভাইস থেকে বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী সাবস্ক্রাইব করতে পারবে। শুধু প্যাকেজ সাবস্ক্রাইবের মাধ্যমে সব টুজি গ্রাহক এই থ্রিজি সেবা কার্যকর করতে পারবে সিম পরিবর্তন ছাড়াই। *৫০০০# এ ডায়াল করে সব থ্রিজি প্যাকেজ কার্যকর করা যাবে। বাংলালিংক থ্রিজি সাবস্ক্রাইবার ভিডিও কলও করতে পারবে খুব সহজে।
বাংলালিংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এই অপারেটরের গ্রাহকরা স্যামসাং শোরুম থেকে হ্যান্ডসেট ক্রয়ে বিশেষ ছাড় পাবে। এ ছাড়া গুলশান ও মতিঝিল কাস্টমার কেয়ার সেন্টার থেকে বিশেষ মাসিক কিস্তিতে স্যামসাং গ্যালাঙ্ িনোট থ্রি কেনা যাবে।
এ উপলক্ষে বাংলালিংকের সিইও জিয়াদ সাতারা বলেন, "সত্যিকার অর্থেই এটি আমাদের জন্য একটি স্মরণীয় মুহূর্ত। বাংলালিংক থ্রিজি-এর 'নতুন কিছু করো' স্লোগানের মাধ্যমে মোবাইল ইন্টারনেট বাজার পুনর্নির্মাণে থ্রিজি সেবা সবার হাতে হাতে পেঁৗছে দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত। বাংলাদেশের বাজারে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির প্রচলন ও ব্যবহারে বাংলালিংক সব সময়ই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। আমরা এ দেশের সম্মানিত গ্রাহকদের পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তি উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি। তৃতীয় প্রজন্মের প্রযুক্তি সফল করার প্রক্রিয়ায় জড়িত সংশ্লিষ্ট সব সরকারি কর্মকর্তা ও স্টেকহোল্ডারদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। সেই সঙ্গে আমি ধন্যবাদ জানাই সম্মানিত গ্রাহকদের উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর সেবা প্রদানে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া সব সহকর্মীকে।"
আলোচিত সংগীতশিল্পী আরেফিন রুমিকে আজ শনিবার ভোররাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন ও মতের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বিয়ের অভিযোগে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় প্রথম স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় রুমিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল হক প্রথম আলো ডটকমকে জানান, যৌতুকসহ বিভিন্ন অজুহাতে দীর্ঘদিন ধরে প্রথম স্ত্রী অনন্যাকে নির্যাতন করে আসছিলেন রুমি। মাঝেমধ্যে তিনি কোনো কারণ ছাড়াই স্ত্রীকে পিটিয়ে বাসা থেকে বের করে দিতেন। এ ছাড়া প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই আরেকটি বিয়ে করেন তিনি। এর প্রতিবাদ করায় গতকাল শুক্রবার রাতেও অনন্যাকে বেধড়ক পেটান রুমি। এসব অভিযোগে অনন্যা বাদী হয়ে গতকাল রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মোহাম্মদপুর থানায় রুমির বিরুদ্ধে মামলা করেন। আজ ফজরের নামাজের পর মোহাম্মদপুর কাঁটাসুরের কাদেরাবাদ হাউজিংয়ের বাসা থেকে রুমিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
গত বছরের অক্টোবরে নিউইয়র্কপ্রবাসী কামরুন নেসার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দেন রুমি। নিউইয়র্ক থেকে ২৪ অক্টোবর রাতে ঢাকায় আসেন কামরুন নেসা। ওই রাতেই রাজধানীর পুরান ঢাকার গুলবদন দরবার শরিফে (রুমির দাদার বাড়ি) দ্বিতীয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন রুমি। বিয়ের অনুষ্ঠানে রুমির প্রথম স্ত্রী অনন্যা, মা, বড় ভাইসহ উভয় পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের পর দুই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তোলা ছবি ফেসবুকে দিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হন এই শিল্পী। রুমির প্রথম স্ত্রী অনন্যার ঘরে আরিয়ান নামের আড়াই বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিলে দ্বিতীয় স্ত্রী কামরুন নেসার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান রুমি। সেখানে তিনি বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানেও অংশ নেন। প্রবাসী বাঙালিদের আয়োজনে ফ্লোরিডার একটি অনুষ্ঠানে হিন্দি গান গাওয়ার জন্য সমালোচিত হন রুমি। এরপর উপস্থিত বাঙালি দর্শকদের কাছে ক্ষমা চান তিনি।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) জাহাজ বহর থেকে বিক্রি করা হচ্ছে পাঁচটি জাহাজ। এসব জাহাজের পেছনে কর্তৃপক্ষ বছরের পর বছর লোকসান দেওয়ায় তা বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে বিএসসি। এদিকে বিএসসির জাহাজ বিক্রির উদ্যোগের বিরোধিতা করেছেন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটির সিম্যানস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
জানা গেছে, বিএসসির ১৩ জাহাজ থেকে পাঁচটি জাহাজ (বাংলার উর্মি, বাংলার রবি, বাংলার গৌরব, বাংলার মুখ ও বাংলার মায়া) বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে তিনটি জাহাজ বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বিক্রির তালিকায় থাকা পাঁচটি জাহাজের গড় বয়স প্রায় ২৯ বছর। বেশ কয়েক বছর এসব জাহাজ বাণিজ্যিকভাবে পরিচালনার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক নৌসংস্থা (আইএমও) প্রণীত ইন্টারন্যাশনাল সেফটি ম্যানেজমেন্ট (আইএসএম ) কোড অনুযায়ী বিএসসির এই পাঁচটি জাহাজের মেয়াদ পাঁচ বছর আগেই শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে বিএসসির বহরে সচল রয়েছে আটটি জাহাজ। এসব জাহাজের গড় বয়স ২৫ বছরের বেশি।
পুরনো জাহাজ বিক্রি প্রসঙ্গে বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মকসুমুল কাদের কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বিএসসির অলাভজনক জাহাজগুলো ক্রমান্বয়ে বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পাঁচটি জাহাজের পেছনে জ্বালানি, রক্ষণাবেক্ষণ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাবদ বিএসসির দৈনিক লোকসান প্রায় ২৫ হাজার ডলার অর্থাৎ ২০ লাখ টাকা। এ ছাড়া এসব জাহাজ এখন আর চলাচলের উপযোগী নয়।' তিনি জানান, পুরনো জাহাজ বিক্রির টাকা দিয়ে নতুন জাহাজ কেনার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিএসসির কর্মকর্তারা জানান, গত ২৭ আগস্ট বাংলার রবি জাহাজের বিক্রির দরপত্র খোলা হয়েছে। এতে ছয়টি প্রতিষ্ঠান জাহাজ কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকায় জাহাজ কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। পরবর্তীতে ২ সেপ্টেম্বর বাংলার মুখ জাহাজের বিক্রির দরপত্র খোলা হয়েছে। এতে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিয়েছে। সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠান প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকায় জাহাজটি কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর বাংলার গৌরব জাহাজের দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। পর্যায়ক্রমে বাকি দুটি (বাংলার উর্মি ও বাংলার মায়া) জাহাজ বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
এদিকে বিএসসির সিম্যানস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওদুদ জাহাজ বিক্রির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেন, 'নতুন জাহাজ কেনার আগে পুরনো জাহাজ বিক্রি করা হলে রাষ্ট্রায়ত্ত এই প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৫০ নাবিক এক সঙ্গে চাকরি হারাবেন।'
মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপিতে প্রত্যাশিত ভূমিকা রাখতে পারছে না শেয়ারবাজার। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১১ সালে আইপিও (ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং) থেকে সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ ছিল জিডিপির ০.১৭ শতাংশ। যেখানে ব্যাংক অর্থায়নের ভূমিকা ছিল ৪৩.৯৯ শতাংশ।
গতকাল শনিবার বিআইবিএম আয়োজিত 'ব্যাংক, শেয়ারবাজার ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি : প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ' শীর্ষক এক জাতীয় সেমিনারে গবেষণালব্ধ এ তথ্য তুলে ধরা হয়। সেমিনারে গবেষণার ওপর তৈরি করা একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিআইবিএমের অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ বাহার। প্রবন্ধের বিভিন্ন বিষয়ের ব্যাখ্যা করেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যাপক ও পরিচালক (আরডি অ্যান্ড সি) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি।
গবেষণা পদ্ধতি সম্পর্কে ড. ব্যানার্জি বলেন, এতে তিনটি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। ব্যাংকের সঙ্গে প্রবৃদ্ধির সম্পর্ক, শেয়ারবাজারের সঙ্গে প্রবৃদ্ধির সম্পর্ক এবং ব্যাংক ও শেয়ারবাজারের সঙ্গে প্রবৃদ্ধির সম্পর্ক ব্যাখ্যা করা হয়েছে। দেখা গেছে, ব্যাংক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। অন্যদিকে শেয়ারবাজার প্রত্যাশিত ভূমিকা রাখতে সফল হচ্ছে না। তবে ব্যাংক ও শেয়ারবাজার একসঙ্গে মোটামুটি একটি ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
এ বিষয়ের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, ব্যাংক ও শেয়ারবাজার দুটোই অভিঘাত (শক) বহন করে। ব্যাংক খাতের অভিঘাত প্রশমনে এর নিয়ন্ত্রক সংস্থা যতটা ভূমিকা রাখতে পেরেছে, শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ততটা পারেনি। শেয়ারবাজার কারসাজির তদন্তকাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ইব্রাহিম খালেদ বলেন, এসইসি সত্যিকার অর্থে নিয়ন্ত্রকের ভূমিকাতেই ছিল না। ছিল কলাবোরেটরের ভূমিকায়। সে সময় এর কর্মকর্তারা কারসাজি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করে বরং সহযোগিতা করেছিলেন। তিনি আরো বলেন, 'শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমিত করা হয়েছে। কিন্তু একটা সময় পর্যন্ত শেয়ারবাজারে আমানতের ১০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগের সুযোগ ছিল। কোনো কোনো ব্যাংক এই ১০ শতাংশও অতিক্রম করে গিয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেক পরে এ বিষয়ে সজাগ হয়।' এ সময় তিনি বাছবিচার ছাড়াই অমনিবাস অ্যাকাউন্ট খোলার বিধান রাখার সমালোচনা করেন।
প্রাইম ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ইয়াসিন আলী বলেন, আইপিও ইস্যুর খরচ বেশি হওয়ায় অনেক কম্পানি শেয়ারবাজারে আসতে চায় না। এ ক্ষেত্রে আইপিও ইস্যুর খরচ কমানো গেলে অনেক কম্পানি শেয়ারবাজারে আসত। এতে কম্পানির স্বচ্ছতা বাড়বে। সরকারও বেশি রাজস্ব পাবে। বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন।
সেমিনারে উপস্থাপিত গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ২০০৭ সালে জিডিপি অর্থায়নে ব্যাংকের ভূমিকা ছিল ৩৩.৮৬ শতাংশ। ২০০৮ সালে তা বেড়ে ৩৫.৯৮ শতাংশ হয়। ২০০৯ ও ২০১০ সালে তা বেড়ে হয় যথাক্রমে ৩৭.৯৮ ও ৪২.৬১ শতাংশ। অন্যদিকে ২০০৭ সালে আইপিও থেকে সংগৃহীত অর্থ ছিল জিডিপির ০.৪৭ শতাংশ। ২০০৮ সালে তা কমে ০.০৬৭ শতাংশ হয়। ২০০৯ ও ২০১০ সালে ছিল যথাক্রমে ০.২১ ও ০.৪২ শতাংশ।
উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে চীন, মালয়েশিয়া ও ভারতের জিডিপি অর্থায়নে ব্যাংকের ভূমিকা ছিল যথাক্রমে ১৪৫.৫ শতাংশ, ১২৮.৭ শতাংশ ও ৭৪.১ শতাংশ। যেখানে বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের ভূমিকা ছিল ৪৩.৯৯ শতাংশ।
২০১১ সালে চীন, মালয়েশিয়া ও ভারতে আইপিও থেকে সংগৃহীত অর্থ দেশগুলোর জিডিপির যথাক্রমে ১.১৫ শতাংশ, ১.৭২ শতাংশ ও ০.৩৫ শতাংশ। যেখানে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের ভূমিকা ছিল মাত্র ০.১৭ শতাংশ।
আলোচকদের অভিমত, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাংক ও শেয়ারবাজারের পরিপূরকভাবে গুরুত্ব রাখতে হবে। এ লক্ষ্যে নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে কাজ হওয়া প্রয়োজন। এ কাজে গবেষণাটি সহযোগিতা করবে বলে আশা করেন সেমিনারের আয়োজকরা। বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী মো. জাহাঙ্গীর মিয়া ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমুদ ওসমান ইমাম।
অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও অতালিকাভুক্ত কম্পানিগুলোর জন্য একটি সিকিউরিটিজ মার্কেট করার প্রস্তাব দেন মো. জাহাঙ্গীর মিয়া। এ ছাড়া তৃতীয় মার্কেটের নামে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য একটি বাজার চালুরও প্রস্তাব করেন তিনি।
ড. ওসমান ইমাম বলেন, এ গবেষণাটি মূলত জিডিপি অর্থায়নের ওপর করা হয়েছে, প্রবৃদ্ধির ওপর নয়। প্রবৃদ্ধি ধরে গবেষণা করলে কার্যকর একটি গবেষণা হতো।
সেলিম রায়হানরানা প্লাজা ধসের পর দেশের পণ্য রপ্তানি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হলেও চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে ভালো রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। রপ্তানি পরিস্থিতির সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান
প্রথম আলো: নানা আশঙ্কা সত্ত্বেও চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১ শতাংশের বেশি। তবে নির্বাচন ঘিরে বড় ধরনের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে রপ্তানির এই ধারা কি বজায় থাকবে?
সেলিম রায়হান: রপ্তানির এই ধারা বজায় থাকবে কি না, তা সুনির্দিষ্টভাবে এখনই বলা খুব কঠিন। তবে এটা এখন প্রমাণিত যে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সংঘাত-সহিংসতার মধ্যেও বাংলাদেশের শিল্পোদ্যোক্তারা এগিয়ে যেতে সক্ষম। তাঁরা এসব প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও কীভাবে উৎপাদন চালিয়ে যেতে ও রপ্তানি অব্যাহত রাখতে হয়, তা জানেন। সুতরাং, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা রপ্তানিতে খুব বড় কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। বিশ্ববাজারে মন্দাভাব থাকলে বরং নেতিবাচক প্রভাবটা বেশি পড়ে। বাইরে চাহিদা কমে গেলে বাজার সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
প্রথম আলো: বর্তমানে বিশ্ববাজারের পরিস্থিতিটা কী রকম?
সেলিম রায়হান: বিশ্ববাজার এখন চাঙা হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদাও বাড়ছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাকের চাহিদা কিছুটা উর্ধ্বমুখী। আর বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের বেশির ভাগই তো তৈরি পোশাকনির্ভর। সুতরাং বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ভালো প্রবৃদ্ধি যখন ঘটে, তখন তা হয় প্রধানত পোশাক খাতের কারণে।
প্রথম আলো: আশঙ্কা ছিল রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের পোশাক খাত বিরাট বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে। রপ্তানির এই তথ্য কী তাহলে এটাই দেখায়, যা বাংলাদেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা কাটিয়ে উঠেছে?
সেলিম রায়হান: বিষয়টি এভাবে দেখা ঠিক নয়। এই ২৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে এখন আমরা যেভাবে আত্মতৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছি, যেভাবে বলা হচ্ছে যে আমরা বিপযর্য় কাটিয়ে উঠছি, তাতে করে বরং মনে হচ্ছে যে রানা প্লাজা ধস ও এক হাজারের বেশি শ্রমিকের প্রাণহানি তেমন বড় ঘটনা নয়। কেননা, রপ্তানি তো বাড়ছেই। এই দৃষ্টিভঙ্গি মোটেও ঠিক নয়। বাংলাদেশের পোশাক খাত প্রকৃত বিচারে বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পারেনি। বাইরের দেশগুলোর ভোক্তারা এখন বাংলাদেশে প্রস্তুত করা পোশাক নিয়ে অনেক বেশি সংবেদনশীল। অনেক বড় বড় বিপণিবিতান তো কিছুদিন বাংলাদেশি পোশাক তাক থেকে সরিয়েই ফেলেছিল। কাজেই রানা প্লাজার বিষয়টি বিস্মৃত হওয়ার কোনোই সুযোগ নেই। বরং এখন বাংলাদেশের পোশাকশিল্পকে টেকসই উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করা প্রয়োজন।
প্রথম আলো: তাহলে কি বলতে চাচ্ছেন যে এত বছরেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প যথেষ্ট টেকসই পর্যায়ে উন্নীত হতে পারেনি?
সেলিম রায়হান: অনেকটা তাই। আমাদের পোশাকশিল্পের বিকাশ বহুলাংশে অপরিকল্পিত। এখানে মান নিয়ন্ত্রণের ঘাটতি রয়েছে। অনেক শিল্প মালিকই শ্রমিকদের বঞ্চনার অনুভূতির প্রতি মনোযোগী নন। বরং অতি মুনাফার প্রবণতা তাঁদের একটা স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে গেছে। মুনাফা হচ্ছে দেখে অনেকেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন এখানে বিনিয়োগ করতে। কিন্তু তাঁরা সুপরিকল্পিতভাবে কারখানা নির্মাণের চিন্তা করেননি। ভাড়া বাড়িতে, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে গড়ে উঠেছে শত শত কারখানা। বড় সমস্যা হলো, পোশাকশিল্পকে নিবিড়ভাবে তদারক করার কোনো দায়িত্বপূর্ণ সংস্থা নেই। এখানে সুশাসনের প্রচণ্ড অভাব রয়েছে। রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাব। এই জায়গায় উন্নতি না হলে ভবিষ্যতে পোশাকশিল্প বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে পারে।
প্রথম আলো: শ্রমিকদের জীবনমান ও ন্যায্য মজুরি উপেক্ষা করার অভিযোগও আছে। এটা থেকে উত্তরণের উপায় কী?
সেলিম রায়হান: শ্রমিকদের জীবনমান ও ন্যায্য মজুরি উপেক্ষা করে যে বেশি দিন চলা সম্ভব নয়, তা তো বারবারই দেখা যাচ্ছে। এই যে এখন প্রায়ই শ্রমিকেরা নানা দাবিতে রাজপথে নেমে আসছেন, সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছেন, এটা কিন্তু পোশাকশিল্পের অভ্যন্তরীণ অব্যবস্থাপনারই ফল। সরকারকে তাই শ্রমিকদের বিষয়ে যথেষ্ট মনোযোগী হতে হবে। মালিকদেরও ইতিবাচকভাবে এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে বাইরের দুনিয়ায় বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের ভাবমূর্তি বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হবে। ভাবমূর্তি নষ্ট হলে গোটা শিল্প কখনোই টেকসই পর্যায়ে দাঁড়াতে পারবে না, নাজুকতা থেকে যাবে।
প্রথম আলো: সরকার ও মালিকদের পাশাপাশি বিদেশি ক্রেতাদেরও তো কিছু দায়িত্ব রয়েছে।
সেলিম রায়হান: ক্রেতারাও ধোয়া তুলসীপাতা নন। শ্রমিকদের একটু ভালো মজুরি দেওয়া, কারখানার পরিবেশ উন্নত করা এসব কাজে যে বাড়তি অর্থ প্রয়োজন, তার জন্য ক্রেতারাও কেউ বাড়তি ব্যয় বহন করতে চান না। অথচ তাঁরা সস্তায় বাংলাদেশ থেকে পোশাক নিয়ে ভালো ব্যবসা করে আসছেন বছরের পর বছর। কাজেই তাঁদের ওপরও চাপ তৈরি প্রয়োজন। আসলে সরকার-মালিক-ক্রেতা মিলে ত্রিপক্ষীয় কাজ করলে তা পোশাক খাতের জন্য সুফল বয়ে আনবে।
সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সদস্য কবীর সিকিউরিটিজকে পাঁচ লাখ ও হিলসিটি সিকিউরিটিজকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) এক সভায় গতকাল মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠান দুটিকে এই জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে বিএসইসি গ্রাহকদের অভিযোগ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্য ডন সিকিউরিটিজের বিপরীতে লেনদেনের অধিকার সনদ ইস্যু না করার নির্দেশ দিয়েছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বিপরীতে বরাদ্দ করা শেয়ার স্থগিত হিসেবে (সাসপেন্স অ্যাকাউন্ট) রাখতে বলেছে। বিএসইসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিএসইসি বলছে, গ্রাহকের টাকা প্রতিষ্ঠানের নামে স্থায়ী আমানত বা এফডিআর করা ও ঋণের অযোগ্য শেয়ারে ঋণ সুবিধা দিয়েছে সিএসইর সদস্য কবীর সিকিউরিটিজ। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে। এ জন্য ওই প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বিএসইসি পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পাঁচ হাজার শেয়ার না থাকার পরও বিক্রি (শর্টসেল) করার দায়ে সিএসইর আরেক সদস্য হিলসিটি সিকিউরিটিজকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে।
চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি হিলসিটির এই শর্টসেলের ঘটনা ঘটে; যা নিয়ন্ত্রক সংস্থার নিজস্ব তদারকি যন্ত্রে ধরা পড়েছে। পাশাপাশি ব্রোকারেজ হাউসগুলো যাতে শর্টসেল থেকে বিরত থাকে সে জন্য দুই স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।
অন্য দিকে ডিএসইর সদস্য ডন সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: গ্রাহকদের অর্থ ও শেয়ার না দেওয়া, গ্রাহককে দেওয়া চেক প্রত্যাখ্যাত হওয়া ইত্যাদি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট থেকে ব্রোকারেজ হাউসটির লেনদেন কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। কিন্তু ব্রোকারেজ হাউসটি গ্রাহকদের অভিযোগের কোনো নিষ্পত্তি করেনি।